দৌড়ে কংগ্রেস ,তৃণমূল তো ছিলই এবার সেই তালিকায় শেষ পর্যন্ত নাম যোগ হল সিপিএমেরও। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে সিপিএমের লাল দুর্গ বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে বড় সড় বিপর্যয় নেমে এল। এলাকার চারবারের সিপিএম বিধায়ক থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত প্রধান, এমনকি এক দশক ধরে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য থাকা দাপুটে নেতা ইউনুস সরকার প্রার্থী হতে না পেরে দলের বিরুদ্ধে চরম চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করে সিপিএম ত্যাগ করলেন।
রবিবার এই ঘটনা চাউর হতেই জেলার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয় তাঁর নতুন করে নির্দল প্রার্থী হিসেবে বা অন্য রাজনৈতিক দলের যাওয়ার ইঙ্গিত দেন ইউনুস এর অনুগামীরা। পাশাপাশি এদিন সংবাদমাধ্যমকে এহেন দলত্যাগী দাপুটে নেতা ইউনুস সরকার তাঁর দলের অন্যান্য সাংগঠনিক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথাও জানিয়ে দেন সরাসরি। ইউনুস সরকার অবশ্য নিজের মুখে দাবি করে বলেন,'আমি একজন সাধারন বাম সমর্থক ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছু নয়। বাকিটা সময় বলবে।' এদিকে মুর্শিদাবাদ জুড়ে এক নামে চেনে ইউনুস সরকারের দলত্যাগের ঘটনায় ডান-বাম সকল রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কার্যত অবাক হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১১সালের শুরুতে রাজ্যে বামেদের পতন হওয়ার পরেও বামেদের গড় বলেই পরিচিত ছিল জলঙ্গি। এমনকি বিধানসভা থেকে পঞ্চায়েত সমিতি ও একাধিক পঞ্চায়েতে আধিপত্য ছিল তাদের। কিন্তু বছর দেড়েক আগে বাম বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক তৃণমূলে যোগ দেয়। তখন থেকেই ভাঙতে শুরু করে একটু একটু করে লাল দুর্গ। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের কাছে নাস্তানাবুদ হতে হয় সিপিআইএমকে। এমন দূরাবস্থায় দলের হাল ধরেন ইউনুস সরকার। নানা সময়ে জঙ্গি আন্দোলন, মিছিল মিটিং করে গ্রেফতারও হয় সে। আর তারপর থেকেই আবার জলঙ্গিতে বামেদের মুখ হয়ে ওঠে ইউনুস সরকার।
আরও পড়ুন, ' ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে যাবে তৃণমূল', BJPতে যোগ দিয়েই বললেন শিশির অধিকারী
এমনকি এবার বামেদের পক্ষ থেকে তাকেই আবার বিধানসভায় লড়তে পাঠানো হবে বলে জলঙ্গীর স্থানীয় সিপিআইএম কর্মীসমর্থকরা প্রচার পর্যন্ত শুরু করে দেয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত প্রার্থী করা হয় সাইফুল মোল্লা নামের এক সিপিএম নেতাকে, আর তাতেই বেজায় চটে যায় দীর্ঘদিনের পোড়খাওয়া সিপিএম নেতা ইউনুস ও তার অনুগামীরা। দলের এখানেও একতরফা সিদ্ধান্তের জন্য স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্ব মূলত দায়ী করেন বর্তমানে দায়িত্বে থাকা জেলা সম্পাদক নিপেন চৌধুরীকে।।যদিও এই ব্যাপারে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নৃপেন চৌধুরীর সঙ্গে এদিন যোগাযোগ করা হলে তিনি পুরো বিষয়টি কার্যত এড়িয়ে গিয়ে বলেন,"এমন ঘটনা আমার জানা নেই। দলীয় স্তরে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে "।