দলের রাজ্য সভাপতিকে একটি চিঠি লেখেন তাঁরা। আর সেই চিঠিতেই নদিয়া উত্তর বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তারপরই একে একে পদত্যাগ করেন ওই ১০জন নেতা।
মাত্র একদিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে দুই কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল। দুই কেন্দ্রেই কার্যত ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। আর ঠিক তার পরের দিনই একের পর এক ধাক্কা গেরুয়া শিবিরে। রবিবারই রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেন গৌরীশঙ্কর ঘোষ। পদ ছেড়েছেন দুই রাজ্য কমিটির সদস্যও। দলের মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক (দক্ষিণ) জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে পদত্যাগ ঘোষণা করেন তিনি। মুর্শিদাবাদের পর এবার ক্ষোভের সুর নদিয়া উত্তরের বিজেপি পদাধিকারীদের গলাতেও। দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে পদত্যাগ করলেন নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার ১০ জন পদাধিকারী।
দলের রাজ্য সভাপতিকে একটি চিঠি লেখেন তাঁরা। আর সেই চিঠিতেই নদিয়া উত্তর বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তারপরই একে একে পদত্যাগ করেন ওই ১০জন নেতা। এই ঘটনা প্রসঙ্গে অর্জুন বিশ্বাসের পাল্টা দাবি, "আবেগের বশেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন ওই নেতারা।"
আরও পড়ুন- উপনির্বাচনে ভরাডুবির পরেই ফের বড় ধাক্কা, রাজ্য সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা বিজেপি বিধায়কের
বালিগঞ্জ বিধানসভা ও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। আসানসোলে নিজেদের জেতা আসনেই ভরাডুবি হয়েছে তাদের। সেখানে রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। আর বালিগঞ্জেও অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির। বরং সেখানে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামেরা। আর উপনির্বাচনগুলিতে হারের পর রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছেন দলেরই একাংশ।
আরও পড়ুন, 'কেন এতগুলি ইস্তফা একসঙ্গে', বিজেপির ভরাডুবির পর বিস্ফোরক অনুপম হাজরা
এদিন ফেসবুকে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা লেখেন, "কেন এতগুলি ইস্তফা একসঙ্গে, সেটা রাজ্য বিজেপির খুব গুরুত্ব সহকারে বিশ্লেষণ করা উচিত। আমি যতদূর জানি গৌরীশঙ্করবাবু একজন ভালো সংগঠক। যাদের এতদিন গুরুত্ব দেওয়া হল, তারা সব দল ছেড়ে চলে গিয়েছে। আর যারা এতদিন মাটি কামড়ে পড়ে ছিল, তাঁর ইস্তফা দিচ্ছেন। আর এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা আমার মতো, যারা বঙ্গ-বিজেপির অসময়ে "মানে যখন পশ্চিমবঙ্গে মানুষ বিজেপিতে যোগ দিতে ভয় পেত অর্থাৎ বঙ্গ-বিজেপির সুসময়ে যোগ দেওয়া রাজিব-সব্যসাচী এবং কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মত জামাই আদর খাওয়া মানুষদের বিজেপিতে আসার অনেক আগে"------ বিজেপিতে যোগদান করে, রাস্তায় নেমে যথেষ্ট পরিমাণে আন্দোলনও করেছিল। যখন অন্যদের মাঠে নেমে আন্দোলন করতে দেখা যেত না, তৃণমূলের কাছ থেকে যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ কেসও খেয়েছে আর এখন প্রতিনিয়ত "দাদা মাঠে নামুন, আপনাদের আর আন্দোলনে দেখা যায় না কেন? শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতে লেকচার দিলে হবে ??" - এই ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হন...কিন্তু তবুও রাজ্য বিজেপি থেকে দূরে, দিল্লিতে বা অন্য রাজ্যে পার্টির কাজ করতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করে।....আসল রহস্যটা কি ???"
আরও পড়ুন- 'তৃণমূল থেকে শেখার আছে, বহিষ্কৃতদের এবার ফেরানো উচিত', হারের পর বিস্ফোরক সৌমিত্র খাঁ
অন্যদিকে, গতকালই বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেছিলেন, "অপরিণত রাজ্য নেতাদের নেতৃত্বে এর থেকে ভালো ফল আশা করা যায় না। অপরিণত নেতৃত্বের জন্যই এই ফলাফল। তৃণমূলের থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। বিষয়টি রাজ্য ও কেন্দ্র নেতৃত্বের ভেবে দেখা উচিত। যে সব নেতৃত্বের বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত।"