এনআরসি-এর আতঙ্কে ফের ছাদনাতলায়, কালনায় মালাবদল ১৫ দম্পতির

  • এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিভ্রান্তি চরমে
  • বিয়ে নিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন অনেকেই
  • গণবিবাহের আসরে ফের মালাবদল ১৫ দম্পতির
  • অভিনব গণবিবাহের আসর বসেছিল কালনায়
     

Tanumoy Ghoshal | Published : Dec 19, 2019 12:10 PM IST / Updated: Dec 19 2019, 05:53 PM IST

দীর্ঘদিনের দাম্পত্য জীবন। রীতিমতো অনুষ্ঠান করে 'অগ্নিসাক্ষী' করে বিয়ে করেছেন। কিন্তু তাতে কি!  এনআরসি-এর আতঙ্কে ফের বিয়ে করলেন ১৫ জন দম্পতি। গণবিবাহের আসর বসল পূর্ব বর্ধমানের কালনায়। 

সামাজিক মতে বিয়ে করেছেন, কিন্ত রেজিস্ট্রি হয়নি। এ রাজ্যে এমন দম্পতির সংখ্যা কিন্তু কম নয়। এতদিন কোনও সমস্যা হয়নি। বরং সন্তান-নাতি-নাতনিদের নিয়ে দিব্যি সুখেই দিন কাটছিল তাঁদের। কিন্তু অসমে এনআরসি লাগু হওয়ার পর রাতারাতি পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে।  বিয়ের শংসাপত্র না থাকায় সমস্যায় পড়তে হবে না তো! আশঙ্কায় ভুগছেন বাংলার অনেকেই।  স্রেফ বিয়ের শংসাপত্র জোগাড় করার জন্য পূর্ব বর্ধমানের কালনা ছেলেমেয়ে, এমনকী নাতি-নাতনির সাক্ষী রেখে ফের সাতপাঁকে বাঁধা পড়লেন ১৫ জন দম্পতি। 

আরও পড়ুন: হিংসায় ভাঙা হচ্ছে জনগণের সম্পত্তি, মুখ বুঁজে 'জোড়া লাগাচ্ছেন' সেতু দাদু

পূর্ব বর্ধমানের তারাবাগান এলাকায় থাকেন নারায়ণ সিনহা রায়। বছর কুড়ি আগে সামাজিক মতে বিয়ে করেছেন তিনি।  কিন্তু কোনও দিন যে বিয়েরও শংসাপত্রের প্রয়োজন হতে পারে, তা মাথাতেই আসেনি। এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিভ্রান্তির মাঝে বিয়ে নিয়ে বেজায় চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি। গত রবিবার কালনায় গণবিবাহের আসরে ফের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গেই মালাবদল করলেন নারায়ণ। তিনি বলেন, 'আমার স্ত্রী অঞ্জলি ও আমি ভাবতেই পারিনি, এতো মজা হবে।  এনআরসি ও  নাগরিত্ব আইন লাগু হলে ভবিষ্যতে কী হবে জানিনা। তবে  বিয়ের শংসাপত্র পেয়ে চিন্তামুক্ত লাগছে।' ওই দম্পতির বিয়েতে হাজির ছিল নাতি-নাতনিরা। আর রেজিস্ট্রি-এর নথিতে সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন মেয়ে। আর এক দম্পতি কালনার বাসিন্দা অরুণ মিশ্র ও তাঁর স্ত্রী গার্গীর বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিই আমাদের বিয়ের শংসাপত্র বিষয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে।  মজাদার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শংসাপত্র পেয়ে দারুন লাগছে।'

কালনায় এই অভিনব গণবিবাহের আসরে আয়োজন করেছিলেন অনুপত্ত দত্ত নামে এক যুবক। এলাকায় সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত তিনি। অনুপম বলেন, 'আইনত বিয়ের শংসপাত্র থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেন না অনেকেই। এনআরসি আর নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। যাঁরা এই গণবিবাহের আসরে বিয়ে করলেন, তাঁদের সকলের হাতে আমার শংসাপত্র তুলে দিয়েছি।' আগামী দিনে পূর্ব বর্ধমান জেলায় বিভিন্ন প্রান্তে অমনই গণবিবাহের আয়োজনের পরিকল্পনা করেছেন উদ্যোক্তারা। 

Share this article
click me!