রবিবারের ঝড়ে কোচবিহারে এখনও পর্যন্ত ৬ হাজারের বেশি বাড়িঘর ভেঙেছে বলে জানা গিয়েছে। আহতের সংখ্যা ২০০ জনেরও বেশি। ঝড় থামার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
তীব্র গরমে নাজেহাল পরিস্থিতি দক্ষিণবঙ্গে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে গরমের পরিমাণও। বেলার দিকে বাইরে বের হতে গেলে মাথায় যেন বাজ পড়ছে। বৃষ্টির দিকে কার্যত চাতক পাখির মতো তাকিয়ে রয়েছেন অনেকেই। আর সেখানে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি যেন লেগেই রয়েছে। রবিবার সন্ধের দিকে কয়েক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙ্গা এলাকা। কোচবিহারে ১ নম্বর ব্লকের মোয়ামাড়ি, ঘুঘুমাড়ি, সুকটাবাড়ি, বড় শোলমারি এলাকায় শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন বহু মানুষ। প্রায় ২০ মিনিট ধরে তাণ্ডব চালিয়েছিল এই ঝড়। আর তার প্রভাব পড়েছে কোচবিহারের অন্যান্য অঞ্চল যেমন মাথাভাঙ্গার ২ নম্বর ব্লক, তুফানগঞ্জের ১ নম্বর ব্লকে।
চাঁদিফাটা গরমে নাজেহাল পরিস্থিতি দক্ষিণবঙ্গে। কয়েকটি জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু, তার পরিমাণ খুব একটা বেশি নয়। অবশ্য কলকাতায় বৃষ্টির দেখাই পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে কার্যত নাজেহাল অবস্থা মানুষের। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইরে বের হতে গেলেই মাথায় হাত পড়ে যাচ্ছে। এমনকী, গরমের মধ্যে বাইরে বের হতে গেলে ওষ্ঠাগত হচ্ছে প্রাণ। তবে বিকেলের পর থেকে হাওয়া থাকায় পরিস্থিতি কিছুটা হলে ভালো হচ্ছে। অবশ্য গরম কমছে না। আর সেখানেই উত্তরবঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই লেগে রয়েছে বৃষ্টি।
রবিবারের ঝড়ে কোচবিহারে এখনও পর্যন্ত ৬ হাজারের বেশি বাড়িঘর ভেঙেছে বলে জানা গিয়েছে। আহতের সংখ্যা ২০০ জনেরও বেশি। ঝড় থামার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। গতকাল রাতেই গুরুতর আহতদের মধ্যে ৪২ জনকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। আর বাকি আহতদের ঘটনাস্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। এই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন- অপেক্ষা শেষ, বৃষ্টি নিয়ে কলকাতাবাসীর জন্য সুখবর দিল হাওয়া অফিস
জানা গিয়েছে, মোয়ামাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ছোট আঠারোকোটা এলাকার বাসিন্দা জহাঙ্গীর আলম এবং ঘুঘুমারি পালপাড়ার বাসিন্দা দেবদাস পালের মৃত্যু হয়েছে। গাছ পড়ে এক জনের মৃত্যু এবং ঝড়ে উড়ে আসা টিনে গলা কেটে মৃত্যু হয়েছে অন্য জনের। টিনের আঘাতে ধড় থেকে মুণ্ডু আলাদা হয়ে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও বিডিও-র তরফে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অবশ্য ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই বেশি।
আরও পড়ুন- আজ কলকাতায় হবে কি কালবৈশাখী, ঝড়-বৃষ্টির অপেক্ষায় দক্ষিণবঙ্গবাসী
এর আগে নববর্ষের দিনও কয়েক মিনিটের ঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল তুফানগঞ্জ। নববর্ষের আগের দিন রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। আর সকাল হতেই শুরু হয় ঝড়। মুহূর্তের ঝড়ে লন্ডভণ্ড হয়ে যায় তুফানগঞ্জের ২ নং ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত উত্তর রামপুর আশ্রম পাড়া। ক্ষতিগ্রস্থ হয় শতাধিক বাড়ি। প্রচুর গাছও ভেঙে যায়। সেই ঝড়েও একজনের মৃত্যু হয় বলে জানা যায়।