প্রাথমিক ভাবে চার জন নিখোঁজের কথা জানা গেলেও পরবর্তীতে ১ জনের খোঁজ মেলে। তাকে নিকবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফের ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে শিল্পতালুক আসানসোল(Asansol)। ফ্লাই অ্যাশের স্টোরেজ(Fly ash storage) ভেঙে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে গেল রানিগঞ্জের মঙ্গলপুরে(Mangalpur in Raniganj)। শনিবার ভোরে(West bardhaman) পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানীগঞ্জের মঙ্গলপুর এলাকার শ্যাম সেল কারখানায় ছাইয়ের ট্যাঙ্কি (শ্যালো) ভেঙে চাপা পড়ে ৩ শ্রমিকের মৃত্যুর খবরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। প্রাথমিক ভাবে চার জন নিখোঁজের কথা জানা গেলেও পরবর্তীতে ১ জনের খোঁজ মেলে। তাকে নিকবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, রাণীগঞ্জের পাওয়ার প্ল্যান্টের ছাই দীর্ঘদিন ধরেই জমা হত একটি একটি বিশালাকার চৌবাচ্চা বা ডাম্পিং স্টোরেজে। কিন্তু দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চৌবাচ্চাটির অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। এই নিয়ে কারাখানার মধ্যে মাঝে মাঝেই শ্রমিক অসন্তোষও তৈরি হয় বলে জানা যায়। এমনকী বিপদ যে যে কোনও ময় ঘটতে পারে সেই আশঙ্কাও আগেই করেছিলেন অনেকে। কিন্তু তারপরেও টনক নড়েনি কারও। এদিকে এদিন আচমকাই চৌবাচ্চাটি ভেঙে পড়ে। সেই মুহূর্তে কর্মরত শ্রমিকরা চাপা পড়ে যায় ভাঙা চৌবাচ্চার নীচে।
আরও পড়ুন- দরজায় কড়া নাড়ছে ধনলক্ষ্মী, লটারি কেটে রাতারাতি কোটপতি জয়নগরের প্রৌঢ়
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ও দমকল বাহিনী। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজও শুরু করে দেয় তারা। মোট চারজনের চাপা পড়ার ঘটনা ঘটলেও একজনকে তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। তাঁর নাম শিবনাথ রাম। তবে তন্ময় ঘোষ, দিলীপ গোপ, শিবশঙ্কর ভট্টাটার্য নামে তিনজন ওই ছাইয়ের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে দু জন বাঁকুড়ার বাসিন্দা এবং একজন পশ্চিম বর্ধমানের হরিশপুরের বাসিন্দা বলে খবর। এদিকে এই ফ্লাই অ্যাশ দিয়ে মূলত ইট তৈরি হয়। ধস কবলিত এলাকায় ভরাট বা জলা জমি ভরাটের কাজের জন্য অনেকেই এই ছাই নিতে আসেন। কিন্তু সেখানেই এবার এতবড় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আশেপাশের এলাকাতেও।
আরও পড়ুন- শীতের আমেজ মেখে জঙ্গলের বাইরে আনাগোনা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের, খুশি সুন্দরবনের পর্যটকেরা
দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনও উদ্ধার করা যায়নি ওই তিন শ্রমিককে। আনা হয়েছে ডোজার। ছাই সরিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। রয়েছে পুলিশ ও দমকল কর্মীরা। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এত দীর্ঘ সময় ছাই চাপা পড়ে কারও পক্ষেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। এদিকে এত বড় দুর্ঘটনার জন্য কারখানার কর্মীরা সরাসরি মালিক পক্ষের দিকেই আঙুল তুলছেন। তাদের স্পষ্ট অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে পাওয়ার প্ল্যান্টের ছাই যে ডাম্পিং স্টোরেজে জমা হত তাতে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ছিল। জল লেগে লেগে পিলার হালকা হয়ে গেছিল। বারবার মেরামতির কথা বললেও কথা শোনেনি মালিক পক্ষ। ইতিমধ্যেই মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিও উঠতে শুরু করেছে শ্রমিকদের একাংশের তরফ থেকে।