বালুরঘাট শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে ল্যাব। সেই সব ল্যাবগুলির বিরুদ্ধে নানান সময়ে নানা অভিযোগ উঠছে। যা দেখেও কার্যত নিশ্চুপ জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
পুরুষের শরীরে মিলল ডিম্বাশয়ের (Overy) খোঁজ। বালুরঘাট শহরে (Balurghat) হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন এলাকার এক বেসরকারি ল্যাবের (Private Laboratory) রিপোর্ট দেখে চোখ ছানাবড়া চিকিৎসক মহল থেকে শুরু করে অসুস্থ বৃদ্ধেরও (Old Man)। আর এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যদিও ল্যাব কর্তৃপক্ষের দাবি প্রিন্টিং মিস্টেকের (Printing Mistake) জন্য এমন ভুল হয়েছে। অবশ্য নিজেদের ভুল স্বীকার করে নিয়েছে ল্যাব কর্তৃপক্ষ। পরে আবার বৃদ্ধের সঠিক রিপোর্ট দেওয়া হয় ল্যাবের তরফে।
বালুরঘাট শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে ল্যাব। সেই সব ল্যাবগুলির বিরুদ্ধে নানান সময়ে নানা অভিযোগ উঠছে। যা দেখেও কার্যত নিশ্চুপ জেলা স্বাস্থ্য দফতর। যা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বালুরঘাটে। জেলাপ্রশাসনের (District Administration) তরফে ওই ল্যাবগুলির উপর কড়া নজরদারির দাবি জানিয়েছে শহরের বাসিন্দারা।
জানা গিয়েছে, মালদহ জেলার বাসিন্দা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী অমিয় চক্রবর্তী। তাঁর বয়স ৮৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। তাই এক আত্মীয়ের সুবাদে বালুরঘাটের এক হোমিও চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করাতে যান। দিন কয়েক আগে সেই চিকিৎসকের পরামর্শে বালুরঘাটের রঘুনাথপুর এলাকায় একটি ল্যাবে আলট্রাসোনোগ্রাফি করাতে গিয়েছিলেন। এরপর আলট্রাসোনোগ্রাফি করার পরে সেই রিপোর্ট নিয়ে হোমিও চিকিৎসক শান্তনু দাসের কাছে যান। আর সেই রিপোর্ট দেখে চক্ষুচড়ক গাছ চিকিৎসকের।
আরও পড়ুন- আজ দোলের জন্য কমানো হয়েছে কলকাতা মেট্রোর সংখ্যা, জানুন কতক্ষণ পাবেন পরিষেবা
ওই রিপোর্টে দেখা যায়, বৃদ্ধের ওভারিতে নাকি সিস্ট রয়েছে! যা সাধারণত মহিলাদের শরীরে হয়ে থাকে। এদিকে চিকিৎসকের এই কথা শোনার পরই মাথায় হাত পড়ে যায় বৃদ্ধের। কী করবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছিলেন না তিনি। এরপর সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রীকে নিয়ে রঘুনাথপুরের সেই বেসরকারি ল্যাবে পৌঁছান। সেখানকার কর্মীরা প্রিন্টিং মিসটেক বলে দাবি করেন। পাশাপাশি ভুল সংশোধন করা হবে বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, বালুরঘাট শহরের ঢুকতেই জেলা সদর হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রয়েছে। রঘুনাথপুর এলাকায় বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা চিকিৎসকদের চেম্বার। যাকে কেন্দ্র করে বহু বেসরকারি ল্যাব গড়ে উঠেছে। দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ এই এলাকায় চিকিৎসা করাতে আসেন। কিন্তু, সেখানে মাঝেমধ্যেই নানা ধরনের রিপোর্ট ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ উঠে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কড়া নজরদারি চালানো দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
এই বিষয়ে ওই বৃদ্ধ অমিয় চক্রবর্তী বলেন, "আমি বালুরঘাটে আমার ভাইপোর বাড়িতে মালদহ থেকে এসেছি। এখানকার এক হোমিও চিকিৎসকের ওষুধ খাই। ওনার পরামর্শে সেই রিপোর্ট করাই। কিন্তু পরে জানতে পারি যে এই ধরনের ভুল রিপোর্ট করেছে। আজ না হয় এত বড় ভুল বলে ধরতে পারলাম। কিন্তু, যেগুলো ভুল ধরা যায় না, সেই রকম হলে কি হত। সাধারণ ভালো মানুষ তো ভুল চিকিৎসায় মারা যাবেন। তাই এখান থেকে আর কোনও রিপোর্ট করাব না।"
আরও পড়ুন, দোলের সকালে পেট্রোল-ডিজেলের কী দাম কলকাতায়, বেরোনোর আগে জ্বালানীর দর দেখুন একনজরে
অন্যদিকে, পাল্টা ওই ল্যাবের তরফে দেবব্রত দাস বলেন, "ওই বৃদ্ধের রিপোর্টে সবই ঠিক ছিল। শুধুমাত্র 'কিডনির' জায়গায় 'ওভারি' হয়ে গিয়েছে। এটা প্রিন্টিং মিসটেকের জন্য হয়েছে। এটা জানার পরে আমরা তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলাম। ওই বৃদ্ধের চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে সেই রিপোর্টটি ঠিক করে দিয়েছি। প্রিন্টিং মিসটেক ছাড়া আমাদের রিপোর্টে কোনও ভুল হয় না।"
এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, "এখনও পর্যন্ত আমার কাছে এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে উপযুক্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।"