পালকিতে চেপে হাসপাতালে এলেন অন্তঃসত্ত্বা, জন্ম দিলেন ফুটফুটে কন্যার, খুশির হাওয়া আলিপুরদুয়ারে

 পালকিতে চেপে হাসপাতলে এলেন  এক অন্তঃসত্ত্বা, জন্ম দিলেন এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের।  অভূতপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থাকল আলিপুরদুয়ার।

 

Web Desk - ANB | Published : Jan 20, 2022 10:24 AM IST / Updated: Jan 20 2022, 06:10 PM IST

 আলিপুরদুয়ার-ডালিয়া চক্রবর্তীঃ- পালকিতে পুরুষ সওয়ারির গল্প কম শোনা গেলেও 'পালকিতে বউ চলে যায়', এটা বাংলার ঐতিহ্য থেকে সমকালীন গানের ট্রেন্ড। তবে সেই ঐতিহ্যকেই এবার শিখরে নিয়ে গেলেন আলিপুরদুয়ারের এক বাসিন্দা।পালকিতে ( Palanquin Amulane Service) চেপে হাসপাতলে এলেন  এক অন্তঃসত্ত্বা (A pregnant woman )। জন্ম দিলেন এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের। আজ্ঞে হ্যাঁ, এমন অভূতপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থাকল আলিপুরদুয়ার (Alipurduar)।

পালকিতে চেপেই পাহাড় থেকে সমতলে নেমে আসেন অন্তঃসত্ত্বা পাশালুং ডুকপা

 সম্প্রতি আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন পাশালুং ডুকপা। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২৬০০ ফুট উচ্চতায় কালচিনি ব্লকের বক্সা পাহাড়ের দারাগাওতে বাড়ি তাঁর। প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে সেখান থেকেই পালকিতে চেপে এসে হাসপাতালে ভর্তি হলেন তিনি। জানা গিয়েছে, ১৫ জানুয়ারি শারীরিক ভাবে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন অন্তঃসত্ত্বা পাশালুং। তড়িঘড়ি তাঁর পরিবারের লোকজন খবর দেয় পাহাড়ে সদ্য চালু হওয়া অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাকে। খবর পেয়েই বাড়ির সামনে হাজির পালকি। সেই পালকিতে  চেপেই পাহাড় থেকে সমতলের জিরো পয়েন্ট অবধি নেমে আসেন অন্তঃসত্ত্বা পাশালুং। তাঁরপর সেখান থেকে প্রথমে লতাবাড়ি মাদার হাব এবং পরে সোজা আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল।  সোমবার সেখানেই এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন পাশালুং ডুকপা। এরপরেই খুশির হাওয়া গোটা বক্সা পাহাড় জুড়ে। 

আরও পড়ুন, Elephants in Bankura: রাস্তা হারিয়ে দিশেহারা ১০ দাঁতাল, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে লোকালয়ে, সতর্ক করল বনদফতর

 ভাগ্য বদল বর্ষশেষে, চালু হল পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা

প্রসঙ্গত, আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের এই বক্সা পাহাড়ে রয়েছে মোট এগারটি ছোট-বড় গ্রাম। যার জনসংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পেরিয়ে গেলেও, বক্সা পাহাড়ে গ্রামগুলিতে আজও তৈরি হয়ে ওঠেনি সড়ক পথ। এই বক্সা পাহাড়ের একদিকে যেমন রয়েছে অপরূপ সৌন্দর্য, আবার রয়েছে দুর্গম পার্বত্য পথ। এই দুর্গম পার্বত্য পথ পায়ে হেঁটেই যাতায়াত করতে হয় এখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের। শারীরিকভাবে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁকে বাঁশের মাচায় ট্রেকিং করে সমতলে নামিয়ে আনতে হত এতদিন ৷ তারপর তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হতো হাসপাতলে। তবে এবার সেই যন্ত্রনার দিন থেকে অনেকটাই মুক্তি।অবশেষে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একুশ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্গম বক্সা পাহাড় থেকে অসুস্থ রোগী ও গর্ভবতী মহিলাদের সমতলের হাসপাতালে আনতে চালু করা হয় পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা। জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর ও এক বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ‍্যোগে শুরু হয় এই পরিষেবা ৷ আর এই পরিষেবা গ্রহণ করেই, নবজাতককে নিয়ে খুশির হাওয়া পাশালুং-র পরিবারে।

Share this article
click me!