ভূমি সংস্কার দপ্তরের উচ্চ আধিকারিক বিএলআরও-এর হুমকির মুখে স্কুল শিক্ষক। ফোন কেড়ে ঘরে আটকে পেটানোর হুমকি।
'ভাইরাল কাণ্ড' নিয়ে 'সচিব পর্যায়ের' তদন্তের দাবি শিক্ষক মহল জুড়ে। সিগারেট মুখে ভূমি সংস্কার দপ্তরের উচ্চ আধিকারিক (Murshidabad Land reforms Department ) বিএলআরও-এর হুমকির মুখে স্কুল শিক্ষক (School Teacher )। ফোন কেড়ে ঘরে আটকে পেটানোর হুমকি। ধরা পড়তেই সংবাদমাধ্যমের কাছে আজব সাফাই।এই ঘটনায় তুলকালাম কাণ্ড মুর্শিদাবাদে। 'ভায়োলেশন অফ ডেকোরাম' লাগু হওয়ার সম্ভাবনা।সরকারি উচ্চ আধিকারিক ভূমি সংস্কার দপ্তর এর বিএলআরও খোদ অফিস চত্বরে সিগারেট মুখে স্কুলশিক্ষককে চড় মেড়ে সিদে করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি থেকে শুরু করে নানান অশ্লীল কথাবাত্রা এমনকি তার ফোন কেড়ে নিয়ে ঘরে আটকে পেটানোর হুমকির ঘটনা ফাঁস হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে জেলাজুড়ে। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত মুর্শিদাবাদের কান্দির ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর এর বিএলআরও বাসব দত্ত মজুমদারকে ডেপুটেশন পর্যন্ত দেওয়া হয়।এমনকী ওই স্কুলশিক্ষককে মারতেও উদ্যত হন ওই অভিযুক্ত বিএলআরও। পরবর্তীতে শিক্ষকের মোবাইলও কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই অফিসারের আচরণ নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
যদিও এ প্রসঙ্গে বিএলএলআরও বাসববাবু চমৎকার সাফাই দিয়ে বলেন, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আমি কথা বলার প্রয়োজন মনে করিনা, যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলবো"। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে একসময় মুখ ফসকে তিনি আজব যুক্তি দিয়ে বলেন,"স্কুল শিক্ষক দপ্তরে এসে সব প্রথমে আমাকে বাজে কথা বলেন। তাই পাল্টা আমিও ধৈর্য হারিয়ে তাকে সামান্য কিছু কথা বলেছি।আপনারা সাংবাদিকরা ওই শিক্ষকের সঙ্গে গিয়ে আগে কথা বলুন তার পরে আমার কাছে আসবেন"। যদিও সরকারি দপ্তরের মধ্যে বেআইনিভাবে অফিস টাইমে সিগারেট খাওয়া থেকে শুরু করে কাউকে 'চড় মারা' 'তুই' বলে সম্বোধন করা এমনকি পেটানোর হুমকি দেওয়া নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উদয়চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা তথা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক শাহাদত শেখ বিএলএলআরওর সঙ্গে জমি সংক্রান্ত কাগজের রেকর্ড নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। আর বিএলএলআরও ওই যুবককে বারবার ধমক দিন শুরুতেই। অভিযোগ এতে কাজ না হলে, মোবাইল কেড়ে নেন। ওই অফিসার বলেন" তুই কাকে ফোন করছিস, তুই কোন নেতার সঙ্গে থাকিস। তোর বড্ড বাড় বেড়েছে। তুই কার সঙ্গে কথা বলছিস জানিস" সহ একাধিক অসম্মানজনক কথা।
এরপর ওই স্কুল শিক্ষক শাহাদাত কে ঘরে ঢুকিয়েও রাখা হয়। ওই স্কুল শিক্ষক প্রচণ্ড অসম্মানিত হয়ে বলেন, একটি জমির রেকর্ড পাওয়ার জন্য আমি প্রায় তিন মাস ধরে ঘুরছি। কাজ হচ্ছে না। কেউ কোনও সদুত্তর দিচ্ছেন না। এনিয়ে অফিসে থাকা কয়েকজনকে একথা বলতেই আমাকে বিএলএলআরও সাহেব মারতে উদ্যত হন। আমার মোবাইল কেড়ে নেন। রীতিমত গুন্ডা মাস্তান এর মত আমাকে তুই তোকারি করে মারার হুমকি দেন। জীবনে এমন অভিজ্ঞতা কোনোদিন হয়নি"। এদিকেওই শিক্ষক শাহাদাতের নামে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন পুলিশের কাছে বিএলআরও। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, 'কান্দি শহরের বুকে এই বিএলআরও অফিস আসলে বাস্তূ ঘুঘুর বাসা। পয়সা ছাড়া এখানকার একাংশ সরকারি আধিকারিক কোন কাজ করতে চান না। প্রতিবাদ করলেই তাদের নানানভাবে শাসানি দেওয়া হয়। তাই ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না।'