সংসারে অভাব আছে, কিন্তু চরিত্রের কোনও খাদ নেই। ৮০ হাজার টাকার গয়না ফিরিয়ে দিয়ে সততার নজির গড়লেন এক টোটো চালক। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। কালীপুজোর দিনে ভাতারে বড় বেলুন গ্রামে পুজিতা হন বড় মা। এই দেবী অত্য়ন্ত জাগ্রত বলে বিশ্বাস স্থানীয় বাসিন্দাদের। মঙ্গলবার বিসর্জন শোভাযাত্রায় সামিল হয়েছিলেন কয়েকজন হাজার মানুষ। ছেলেকে নিয়ে টোটো চেপে ছেলেকে নিয়ে বড়মার বিসর্জন দেখতে এসেছিলেন পুষ্প মণ্ডল নামে এক গৃহবধূও। তাঁর বাড়ি ভাতারেরই রবীন্দ্রপল্লিতে। ওই গৃহবধূর জানিয়েছেন, গলায় দুই ভরি ওজনের একটি সোনার হার পরেছিলেন তিনি। কিন্তু বিসর্জন দেখে ফেরার পথে খেয়াল করেন, হারটি গলায় নেই! ধরেই নিয়েছিলেন, ভিড়ের মাঝে কেউ হয়তো হারটি ছিনতাই করে নিয়েছিল। গয়না যে শেষপর্যন্ত ফিরে পাবেন, এমনটা আশাই করেননি পুষ্প। কিন্তু বাস্তবে ঘটল ঠিক উল্টো। বাড়ি বয়ে এসে ওই গৃহবধূর গয়না ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন এক টোটো চালক।
ভাতারের খুন্না গ্রামে থাকেন সঞ্জীব সামন্ত। পেশায় তিনি টোটো চালক। গত প্রায় দু'বছর ধরে ভাতারের বিভিন্ন রাস্তায় টোটো চালাচ্ছেন সঞ্জীব। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার তাঁর টোটোতে চেপেই বড়মার বিসর্জন দেখতে গিয়েছিলেন ভাতারের রবীন্দ্রপল্লীর বাসিন্দা পুষ্প মণ্ডল ও তাঁর ছেলে অভিজিৎ। টোটোতেই কোনও ওই গৃহবধূ গলার হারটি খুলে পড়ে যায়। কিন্তু তিনি তা খেয়াল করেননি। এদিকে রোজকার মতোই রাতে যখন টোটো চার্জ দিয়ে যান সঞ্জীব, তখন তাঁর নজরে পড়ে টোটোয় একটি সোনার হার পড়ে রয়েছে। এখন ওই টোটো চালক যদি হারটি নিজের কাছে রেখে দিতেন, তাহলে হয়তো কেউ টেরও পেত না। কিন্তু সঞ্জীব সামন্তের মতো মানুষ তো অন্য ধাতুতে গড়া! বুধবার সকালে হারটি সঙ্গে নিয়ে ভাতারের রবীন্দ্রপল্লিতে পুষ্প মণ্ডলের বাড়িতে হাজির হন তিনি। বাড়ির লোকের কাছে জানতে চান, তাঁদের কোনও সামগ্রী খোয়া গিয়েছে কিনা। তখনই সোনার হারের কথা জানতে পারেন ওই টোটা চালক। হারটি যাঁর, তাঁকে ফিরিয়ে দেন তিনি। একজন গরীব টোটো চালকের সততায় মুগ্ধ সকলেই