বামেদের সঙ্গে তৃণমূলকেও সমর্থন, মান্নানের ফর্মুলায় প্রশ্ন কংগ্রেসেই

  • রাজ্যের তিনটি বিধানসভায় উপনির্বাচন
  • উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট এবং তৃণমূলকে একসঙ্গে সমর্থনের পরামর্শ আব্দুল মান্নানের
  • চিঠি লিখে জানালেন সভানেত্রী সোনিয়া গাঁধীকে
  • মান্নানের পরামর্শে প্রশ্ন কংগ্রেসের মধ্যেই

debamoy ghosh | Published : Oct 29, 2019 5:48 AM IST

একই সঙ্গে রাজ্যে তিন উপনির্বাচন। সেখানে বামেদের সমর্থন করার পাশাপাশি তৃণমূলকেও সমর্থনের পরামর্শ দিয়ে বিতর্কে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তাও আবার সরাসরি দলের সভানেত্রী সোনিয়া গাঁধীকে চিঠি পাঠিয়ে এই প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। মান্নানের লেখা সেই চিঠি ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে মান্নানের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন কংগ্রেসের নেতা কর্মীরাই।

আগামী ২৫ নভেম্বর রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হতে চলেছে। সেগুলি হল কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর এবং খড়্গপুর সদর। এই তিনটি আসনেই জোট বেঁধে লড়ার কথা ভাবছেন প্রদেশ কংগ্রেস এবং রাজ্য বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। তা নিয়ে দুই পক্ষের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। এরই মধ্যে সোনিয়া গাঁধীকে লেখা আব্দুল মান্নানের চিঠি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। 

সোনিয়া গাঁধীকে লেখা চিঠিতে মান্নান জানিয়েছেন, বাম নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর যে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে, তাতে কালিয়াগঞ্জ আসনে কংগ্রেস প্রার্থীকে বামেরা সমর্থন করবে। আর করিমপুরে বাম প্রার্থীকে সমর্থন করবে কংগ্রেস। দু' ক্ষেত্রেই বিজেপি-কে রুখতেই এই ফর্মুলা প্রয়োগ করার কথা বলেছেন মান্নান। ২০১১ সাল পর্যন্ত করিমপুরে সিপিএমের আধিপত্য থাকলেও ২০১৬-তে সেই আসনটিও জিতে নেয় তৃণমূল। 

কালিয়াগঞ্জ এবং করিমপুর নিয়ে মান্নানের তত্ত্বে সেভাবে প্রশ্ন না উঠলেও খড়্গপুর সদর নিয়ে মান্নানের দেওয়া ফর্মুলাকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কারণ মান্নানের পরামর্শ অনুযায়ী, যেহেতু খড়্গপুরে কংগ্রেস সাংগঠনিকভাবে খুবই দুর্বল, তাই ওই আসনে বিজেপি-কে ঠেকাতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে সমর্থন করুক কংগ্রেস। মান্নানের যুক্তি, এ রাজ্য থেকে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৮টি আসন জিতলেও সম্প্রতি মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানায় আশনুরূপ ফল করতে পারেনি। এই অবস্থায় এ রাজ্যের তিনটি কেন্দ্রে উপনির্বাচনেও শূন্য হাতে ফিরলে বিজেপি-র আত্মবিশ্বাস অনেকটই ধাক্কা খাবে। 

যদিও মান্নানের এই তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কংগ্রেসের নেতা, কর্মীরাই। তাঁরা বলছেন, এ রাজ্য বিজেপি-কে ঠেকানো অবশ্যই তাঁদের লক্ষ্য, কিন্তু তা তৃণমূলের  সুবিধা করে দেওয়ার জন্য নয়। দলের মধ্যে এমনও অভিযোগ উঠছে যে তৃণমূলকে তুষ্ট করে বিরোধী দলনেতার পদ ধরে রাখতেই এমন অবাস্তব প্রস্তাব দিচ্ছেন মান্নান। কংগ্রেস সমর্থকদের প্রশ্ন, খড়্গপুরে তৃণমূলকে সমর্থন করলে বাকি দুই কেন্দ্রে কোন মুখে ভোটারদের কাছে যাবেন দলের নেতা- কর্মীরা?

আব্দুল মান্নান অবশ্য এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেছেন, যা করেছেন বিজেপি-কে ঠেকাতেই। এর মধ্যে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার কোনও বিষয় নেই। কারও কারও আবার প্রশ্ন কট্টারর তৃণমূল বিরোধী বলে পরিচিত মান্নান হঠাৎ তৃণমূলের সুবিধার্থে কীভাবে এমন সওয়াল করছেন। প্রঙ্গত সারদা মামলাতেও সুপ্রিম কোর্টে প্রথম মামলা করেছিলেন মান্নানই। সেই তিনিই এখন তৃণমূলকে সমর্থন করতে বলায় দলের মধ্যেই প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। 
 

Share this article
click me!