বড় প্রিয় ছিল সে। একবার নাম ধরে ডাকলেই, গুটিগুটি পায়ে হাজির হয়ে যেত। কিন্তু কোথায় যে চলে গেল! আদরের মিনিকে হারিয়ে মনখারাপ পরিবারের সকলেরই। অগত্যা মেদিনীপুরে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিড়ালের ছবি দিয়ে পোস্টার লাগিয়েছেন খোদ অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভুমি ও ভূমি সংস্কার) উত্তম অধিকারী। সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে জোর প্রচার। এমনকী, বিড়ালের সন্ধান দিতে পারলে, ২ হাজার টাকা নগর পুরস্কারও ঘোষণা করেছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক।
কত মানুষ তো হারিয়ে যান! শত চেষ্টা করেও আর তাঁদের খোঁজ মেলে না। আর একটি বিড়ালকে ফিরিয়ে আনতে কিনা 'সন্ধান চাই' পোস্টার লাগানো হয়েছে! নিন্দুকেরা এমনটাই বলতেই পারেন। কিন্তু যাঁরা বাড়িতে বিড়াল কিংবা কুকুর পোষেন, পোষ্যকে হারিয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা তাঁরাই বোঝেন। কতটুকুই বা বয়স ছিল তখন প্রাণীটির! মোটে ১ বছর ৬ মাস। বেলঘড়িয়া রামকৃষ্ণ মিশন থেকে বড় সাধ করে একটি বিড়ালকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক উত্তম অধিকারী। অল্প কিছুদিনের মধ্যে বাড়ির সকলেই প্রিয় হয়ে ওঠেছিল মার্জারটি। অতিরিক্ত জেলাশাসক যখন যেখানে বদলি হয়েছেন, তখন সেখানেই থেকেছে বিড়ালটিও। পোষ্যকে কখনও কাছছাড়া করেননি উত্তম অধিকারীর পরিবারের লোকেরা। বিশেষ করে মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসকের মেয়ের খুবই প্রিয় ছিল সে। তাই প্রিয় মার্জারকে ফিরিয়ে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন রাজ্য সরকারের ওই পদস্থ আমলা। ছবি দিয়ে পোস্টার কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া প্রচার করাই শুধু নয়, কেউ যদি অতিরিক্ত জেলাশাসকের পোষ্য মার্জারের সন্ধান দিতে পারেন, তাহলে নগদ দু'হাজার টাকা পুরস্কার পাবেন!
জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর শহরের অতিরিক্ত জেলাশাসকের বাংলোতেই থাকত বিড়ালটি। কালীপুজোয় বাংলোয় আসে অন্য একটি বিড়াল। পরিবারের লোকেদের দাবি, তারপর থেকে তাঁদের পোষ্য বিড়ালটির আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক উত্তম অধিকারীর মেয়ে পড়েন কলকাতার বেথুন কলেজে। বিড়ালটি তাঁর অত্যন্ত প্রিয় ছিল। তাই সবার আগে কলকাতায় তাঁকে খবর পাঠান পরিবারের লোকেরা। খবর পেয়ে আর দেরি করেননি। কলকাতা থেকে সোজা মেদিনীপুর চলে আসেন ওই তরুণী। পরিবারের সকলে মিলে বিড়ালে খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু লাভ হয়নি বিশেষ। এখন পুরস্কারের লোভেও যদি কেউ বিড়ালটিকে ফিরিয়ে দেয় কিংবা নিদেনপক্ষে কোনও সন্ধান মেলে... সেই আশাতেই বসে আছেন মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক ও তাঁর পরিবারের লোকেরা।