নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় স্ত্রী স্মার্ট ফোন কেনায় সন্দেহের বসে ভাড়াটে খুনী দিয়ে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় স্বামী রাজেশ ঝা ও ভাড়া করে আনা এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তবেও এখনও পলাতক একজন।
নরেন্দ্রপুর থানা (Narendrapur police station) এলাকায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্য়েই ধৃত স্বামী সহ দুই জন।উল্লেখ্য, স্ত্রী স্মার্ট ফোন কেনায় সন্দেহের বসে ভাড়াটে খুনী দিয়ে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার লস্করপুর পেয়ারাবাগানে। এই ঘটনায় স্বামী রাজেশ ঝা ও ভাড়া করে আনা এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবেও এখনও পলাতক একজন। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ (Police)।
এদিন নরেন্দ্রপুরের ওই ভয়াবহ খুন করার চেষ্টার সময় ঠিক কী ঘটেছিল, তা বর্ণনা করেন আক্রান্ত ওই গৃহবধূ। তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে তাঁর স্বামী রোজকার মত ঘরে ঢোকে। এরপর তার স্ত্রীর কাছ থেকে চাবি নিয়ে তিনি নিজেই গেটের তালা লাগাতে যান। গেটে তালা লাগাতে দেরি হচ্ছে দেখে গৃহবধূ দেখতে গেলে হঠাৎ করে এক জন দুষ্কৃতী তার মুখ চেপে ধরে। অপর আরেক দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার দিকে তেড়ে আসেন। সে চিৎকার করতে থাকলে তাকে খাটে শুইয়ে তার গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয়। তখন গৃহবধূর চিৎকারে আশেপাশের লোক জন ছুটে আসে। ততক্ষণে রক্তে ভেসে গিয়েছে গৃহবধূর শরীর। এদিকে ধরা পড়ার ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দুই দুষ্কৃতী ও তার স্বামী। তবে স্থানীয় মানুষজন এর তৎপরতায় একজন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে তাঁরা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও তল্লাশি চালিয়ে তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় খড়দহ থেকে আসা লোকাল ট্রেনের টিকিট। গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁদের দুজনেরই মুখ ঢাকা অবস্থায় ছিল। এরপর স্থানীয় লোকজন ওই গৃহবধূকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। তাঁর গলায় সাতটি সেলাই পড়ে। এরপর খবর দেওয়া হয় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে দুষ্কৃতী ও স্বামীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
ওই গৃহবধূর আরও অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত তাঁর স্বামী রাজেশ ঝাঁ। কিন্তু সন্তানের মুখের দিকে তাঁকিয়ে সবকিছু মেনে নিতেন তিনি। এমনকি পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলতে দিত না তাঁর স্বামী। মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারতো না ওই গৃহবধূ। এই করোনা আবহে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, স্বামীর কাছে তাঁর সন্তানদের অনলাইনে পড়াশোনার জন্য একটি স্মার্টফোন কিনে দেওয়ার কথা বলেন। স্বামী ফোন কিনে না দেওযায় নিজের জমানো টাকা থেকেই স্মার্ট ফোন কেনেন রুপা ঝাঁ। কিন্তু স্বামীর কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেন ফোন। স্বামী বাড়ি থেকে কাজে বের হলে, তারপরেই ফোন ব্যবহার করতেন। কিন্তু আচমকাই স্বামী, স্ত্রীকে ফোন ব্যবহার করতে দেখে ফেলেন। এরপরেই ঘটনার মোড় ঘোড়ে। তারপরেই এই খুনের চেষ্টা বলে অভিযোগ। যদিও স্বামী -সহ এক দুষ্কৃতিকে গ্রেফতার করলেও এখনও পলাতক রয়েছে আরও এক দুষ্কৃতী। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। স্বামী রাজেশ ঝাঁ ও এক দুষ্কৃতীকে এদিন বারুইপুর আদালতে তোলা হবে। তবে কী কারণে এই খুনের চেষ্টা, তার তদন্ত শুরু করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।