লীয় নেতাদের বৈঠকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রী আগামী ৪ মে রাজ্যে আসতে পারেন অমিত শাহ।
বিধানসভায় আশাপ্রদ ফল না হওয়ার পর থেকেই অশান্তি শুরু হয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে। তৃণমূল থেকে বিজেপিকে যোগদানের যে ঢেউ উঠেছিল ২০২১ সালের নির্বাচনের আগে নির্বাচনে পরে তার উল্টোশ্রোত চলছে। তারওপর পরবর্তী পুরসভা নির্বাচনে ফল আরও খারাপ হয়েছে। দ্বিতীয় স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে গেরুয়া শিবির। পাল্টা অশান্তি আরও বেড়েছে সমান তালে চলছে দলবদল। ঘরোয়া এই অশান্তির আবহেই পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসছেন বিজেপি নেতা তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মে মাসে তিন দিনের সফরে বাংলায় আসতে পারেন তিনি। আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই সবকিছু ভুলে বিজেপির রাজ্য নেতারা নতুন করে গ্রাম বাংলা দখলের লক্ষ্যে লড়াইয়ের ময়দানে নামতে চাইছেন। তাই রাজ্য নেতাদের কাছে অমিত শাহের এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি মে মাসে রাজ্য জুড়ে কয়েকটি প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করতে চলেছে। সেই সমাবেশের রণকৌশল ঠিক করে দিতে পারেন অমিত শাহ। দলীয় নেতাদের বৈঠকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রী আগামী ৪ মে রাজ্যে আসতে পারেন অমিত শাহ। সেই সময় তিনি তিন দিন এই রাজ্যে থাকবেন। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। তবে তাঁর সফরসূচি এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সূত্রের খবর রাজ্যে এলে অমিত শাহ, বিএসএফ-এর সেনা নিবাস এলাকা পরিদর্শন করতে পারেন। বিজেপি সূত্রের খবর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিয়ে কলকাতাতেও দলের পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতে পারে। তবে অমিত শাহ রাজ্যে এলে দলীয় বিধায়ক ও সাংসদদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। সুকান্ত মজুমদার বলেছেন অমিত শাহর এই রাজ্য সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হবে বিজেপির কাছে। কারণ বিধানসভা ভোটের পর এটাই হবে তাঁর প্রথম বাংলা সফর। তিনি আরও বলেছেন আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন। রণকৌশল সম্পর্কেও অমিত শাহ দলীয় নেতা কর্মীদের সাহায্য করতে পারেন বলেও আশা করেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
অন্যদিকে গেরুয়া শিবিরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সেই কারণেই অমিত শাহের মত হাইপ্রোফাইল নেতার বাংলা সফর গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করছে রাজ্য বিজেপি নেতারা। সম্প্রতী আসানসোল উপনির্বাচনে হারের কারণে সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরার মত নেতারা রাজ্য বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে দলীয় নেতাদের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে গৌরীশঙ্কর ঘোষ সহ অনেতেই রাজ্য কমিটি ছেড়েছেন। তাই বিজেপি আরও ভাঙতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভাঙন রুখতে অমিত শাহ টনিকের কাজ করতে পারে বলেও মনে করেছেন অনেকে।
সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, আগামী ২ মে হিংসার শিকার হওয়া বিজেপি কর্মী সমর্থক ও তাদের পরিবারকে নিয়ে কলকাতায় মিছিল করবেন। পরের দিনই রাজ্যে হিংসার অভিযোগ তুলে মিছিল মিটিংএর আয়োজন করা হবে। ৭ মে সাংসদ ও বিধায়করা আক্রান্ত বিজেপি নেতা কর্মীদের সঙ্গে দেখা করবেন। ১০ মে আক্রান্ত পরিবারগুলিকে নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গ দেখা করারও পরিকল্পনা রয়েছে। ৮.৯.১১ মে হিংসা বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোক্ষ কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মোটের ওপর রাজ্য বিজেপি রাজনৈতিক হিংসাকে হাতিয়ার করেই বাংলার মানুষের কাছে নতুন করে পৌঁছাতে চাইছে। অন্যদিকে এই মাসের শেষের দিকে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছেও আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে বলে সূত্রেরখবর।