আনিস হত্য়াকাণ্ডে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে রাজি ছাত্রনেতার পরিবার। যদিও সম্মতি দিলেও কাছে সিটের দুই দিন সময় চেয়ে নিয়েছে আনিসের পরিবার, তবে সেই সময় কি আদৌ পাবে আনিসের পরিবার, এহেন প্রশ্নের মাঝেই ঘটনা মোড় নিয়েছে।
আনিস হত্য়াকাণ্ডে (Anis Khan Murder Case ) দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে ( Autopsy) রাজি ছাত্রনেতার পরিবার। যদিও সম্মতি দিলেও কাছে সিটের (SIT) দুই দিন সময় চেয়ে নিয়েছে আনিসের পরিবার। তবে সেই সময় কি আদৌ পাবে আনিসের পরিবার। তবে কি শনিবারেই কবর থেকে তোলা হবে দেহ, ইতিমধ্যেই এই প্রশ্ন সবার মনে ঘুরপাক ঘুরছে। এহেন মুহূর্তেই শনিবাই আনিসের বাড়ি রওনা দেয় পুলিশ। তবে বিক্ষোভের মুখে পড়ে দেহ না নিয়েই ফিরতে হল পুলিশকে।
কবর থেকে তুলে এনে দ্বিতীয়বার আনিস খানের দেহের ময়নাতদন্ত করতে চান তদন্তকারীর দল। যদিও বৃহস্পতিবার অবধিও একটু রাজি ছিল না এই বিষয়ে আনিসের পরিবার। আনিসের বাবা তথা গোটা পরিবার সিবিআই তদন্তে দাবি জানিয়ে এসেছে প্রথম থেকেই। এহেন পরিস্থিতি মুখ্যমন্ত্রী গঠন করা সিটের হাতে বরাদ্দ ১৫ দিনও কমতে শুর করেছে। কারণ তার মধ্য়েই সব রহস্যের উণ্মোচন হবে, প্রকৃত সত্যি বাইরে আসবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তাই শেষ অবধি আনিস হত্য়াকাণ্ডে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে পরিবার রাজি হতেই আর কি সময় নষ্ট করবে সিট। এমনই প্রশ্নের অন্তারালে নিজের সিদ্ধান্তের স্থির সিট। শনিবার রাতেই এসডিপিও আমতা আনিসের বাড়ি পৌছন। তবে অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও স্থানীয় বাসিন্দারা দেহ তুলতে দেয়নি বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন, আনিস খুনে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে গেলেন আমতা থানার ওসি, ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত
পরিবার দুই দিনের সময় চাইলেও তা সোমবারে গিয়ে দাঁড়ায়। তার মাঝে আছে আবার আগামী ২৪ ঘন্টায় ১০৮ পুরসভার ভোট। তাই পরিস্থিতি বদলের আগেই কি বড় কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য, যদিও তা এখনও কিছু সরকারের তরফে জানানো হয়নি।শুক্রবার বিকেলেই আনিস খানের বাড়িতে যান সিটের সদস্যরা। কবর থেকে দেহ তোলার জন্য নোটিশ দেওয়া হয় পরিবারকে।জানানো হয়, শনিবার ভোরেই কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তে পাঠানো হবে। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে আপত্তি নেই পরিবারের। তবে তাঁরা চাইছেন শনিবারের পরিবর্তে সোমবার পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হোক। তবে আরও দেরি করলে দেহে পচন ধরতে পারে আশঙ্কা করছেন তদন্তকারীর দল। সেক্ষেত্রে আনিসের পরিবারকে আর সময় দেওয়া হবে কি না, সেটা স্পষ্ট ছিল না শনিবার রাত অবধিও। তবে এদিন সকালে পুলিশ দেখে কবর থেকে দেহ তুলতে বাধা দেয় স্থানীয়রা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আনিসের পরিবার সোমবার দেহ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন, তবে কেন শনিবার এল পুলিশ।
প্রসঙ্গত, আনিস হত্যাকাণ্ডে মৃত যুবকের বাবা সালাম খানের অভিযোগ থেকে জানা গিয়েছে, পুলিশের পোশাক পরিহিত ৪ জন লোক বাড়ির ভেতরে ঢুকে আনিসকে খুন করে। পরিবার সূত্রে খবর আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আনিস আগাগোড়া কলকাতাতেই থাকতেন। তিন দিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন। শুক্রবার সন্ধ্যাবেলা পাড়ার একটি জলসাতে গিয়েছিলেন। এরপরে গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন তিনি। তার কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ চার জন লোক রাত ১টা নাগাদ তাঁদের বাড়িতে যান। ওই চারজনের মধ্যে একজন পুলিশের পোশাক পরা থাকলেও বাকিদের শরীরে জলপাই রঙের পোশাক পরা ছিল। আমতা থানার পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা তিনতলা থেকে আনিসকে ফেলে দেয়। এরপরেই মৃত্যু হয় আনিসের। তাই প্রশ্নগুলি থেকেই যায়, সেদিন গভীররাতে কারা এসেছিল পুলিশের বেশে আনিসের বাড়িতে, কারা খুন করল ছাত্রনেতা আনিস খানকে। তবে শেষ অবধি কী হবে, ১৫ দিনের মধ্য়েই কি উত্তর দেবে সিট, নাকি তদন্তভার যাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে, তা সময়ই বলবে।