সংক্ষিপ্ত
আনিস খান হত্যাকাণ্ডে গাফিলতির অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হল আমতা থানার ওসি দেবব্রত চক্রবর্তীকে। পাশাপাশি সিটের আবেদন মঞ্জুর করল উলুবেড়িয়া আদালত, ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।
আনিস খান হত্যাকাণ্ডে (Anis Khan Murder Case) অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হল আমতা থানার ওসি (OC) দেবব্রত চক্রবর্তীকে। তাঁর বিরুদ্ধে কর্তব্য়ে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে এবং শুরু হচ্ছে বিভাগিয় তদন্ত। এদিকে পাশাপাশি সিটের আবেদন মঞ্জুর করল উলুবেড়িয়া আদালত। আনিস খান খুনের কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার প্রীতম ভট্য়াচার্য এবং হোমগার্ড কাশিনাথ বেরাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট (Court)।
আনিস খান হত্যাকাণ্ডে আমতা থানার দায়িত্বে আনা হল কিঙ্কর মণ্ডলকে। স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের সদস্য ছিলেন কিঙ্কর মণ্ডল।আমতা থানার ওসির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারই সরব হয়েছিলেন ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার প্রীতম ভট্য়াচার্য এবং হোমগার্ড কাশিনাথ বেরা। সরাসরি ষড়যন্ত্র এবং ফাঁসানোর অভিযোগ করেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়া আদালতে পেশের সময় ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার প্রীতম ভট্য়াচার্য এবং হোমগার্ড কাশিনাথ বেরা বলেন, আমরা সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমাদেরকে বলির পাঠা করে আনিসকাণ্ডে জল ঢালা হচ্ছে। আমাদেরকে থানা থেকে পাঠানো হয়েছিল। আমরা ওসির অর্ডার ক্যারি করতে গিয়েছিলাম। আমরা ছিলাম না।' এমনকি এখানেই শেষ নয়, সরাসরি ওসি-র বিরুদ্ধে নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন, আনিস খুনের প্রতিবাদে উত্তাল আমতা থানা, গার্ডরেল তুলে ছুড়ে ফেলল বিক্ষোভকারীর দল
অপরদিকে, রাজ্যোর তৈরি সিটের তরফে আনিসের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের আর্জি জানানো হয়েছে। এদিকে রাজ্য পুলিশের ডিজি অমিত মালব্য আগেই বলেছেন, 'আবার ময়না তদন্ত করতে চায় পুলিশ। কিন্তু তাতে রাজি হচ্ছে না পরিবার। আনিসের মোবাইল ফোনও দেওয়া হচ্ছে না। তাই তদন্তে অসুবিধা হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করুক পরিবার', এমনই আবেদন করেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। 'সিটকে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে', বলেও অভিযোগ। বৃহস্পতিবার, মূল অভিযুক্তকে সনাক্তকরণের জন্য টিআই প্যারেডেরও আবেদন জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে আনিস খান খুনের কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার প্রীতম ভট্য়াচার্য এবং হোমগার্ড কাশিনাথ বেরাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।
আরও পড়ুন, 'আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে', আনিস খুনে সিবিআই তদন্তের দাবি ধৃত পুলিশের স্ত্রী-র
আরও পড়ুন, 'রাস্তা আটকে আন্দোলন বরদাস্ত করবো না', আনিস খুনের কাণ্ডে কড়া বার্তা মমতার
প্রসঙ্গত, আনিস হত্যাকাণ্ডে মৃত যুবকের বাবা সালাম খানের অভিযোগ থেকে জানা গিয়েছে, পুলিশের পোশাক পরিহিত ৪ জন লোক বাড়ির ভেতরে ঢুকে আনিসকে খুন করে। পরিবার সূত্রে খবর আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আনিস আগাগোড়া কলকাতাতেই থাকতেন। তিন দিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন। শুক্রবার সন্ধ্যাবেলা পাড়ার একটি জলসাতে গিয়েছিলেন। এরপরে গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন তিনি। তার কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ চার জন লোক রাত ১টা নাগাদ তাঁদের বাড়িতে যান। ওই চারজনের মধ্যে একজন পুলিশের পোশাক পরা থাকলেও বাকিদের শরীরে জলপাই রঙের পোশাক পরা ছিল। আমতা থানার পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা তিনতলা থেকে আনিসকে ফেলে দেয়। এরপরেই মৃত্যু হয় আনিসের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। চলতি সপ্তাহে একের পর এক বিক্ষোভ হয়েই চলেছে। একাধিক রাজনৈতিক দল নেমেছে রাজপথে।