লোক ধার দিতে চান অনুব্রত, ধন্যবাদ জানালেন সিপিএম নেতা

  • সিপিএম-এর প্রশংসায় অনুব্রত মণ্ডল
  • সিপিএম-কে সহযোগিতা করতেও রাজি তিনি
  • বিজেপি আতঙ্ক কাটাতেই কৌশল অনুব্রতর

debamoy ghosh | Published : Nov 25, 2019 10:24 AM IST / Updated: Nov 25 2019, 04:27 PM IST

বিজেপি নয়, সিপিএম- ই নাকি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। বিজেপি জুজু কাটানোর জন্যই কিনা জানা নেই, এমনই মন্তব্য করলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সিপিএম-কে প্রয়োজনে লোক দিয়েও সাহায্য করার বলেন তিনি। সিপিএম-কে এতটা গুরুত্ব দেওয়ার জন্য তৃণমূল নেতাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম। 

রবিবার নলহাটি বিধানসভার বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন ছিল। সেই কর্মিসভা শেষেই সাংবাদিকদের সামনে সিপিএম-এর প্রশংসা করেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, 'আগামী বিধানসভা নির্বাচনে চাইলে আমরা সিপিএম- কে লোক দেব। বিধানসভায় আমাদের সঙ্গে মূল লড়াই হবে সিপিএম- এর। ওরা পুরনো দল। ক্ষতিপূরণ করে নেবেই।' খালি চোখে তিনি সিপিএম-কে দেখতে পেয়েছেন, তার জন্য তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম। 

গত লোকসভা নির্বাচনে অনুব্রতর বীরভূমে প্রবলভাবে শক্তি জাহির করেছে বিজেপি। দু'টি লোকসভাতেই তৃণমূল জিতলেও এগারোটির মধ্যে পাঁচটি বিধানসভাতেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। নলহাটি বিধানসভাতেও তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও পুর এলাকার প্রায় পুরোটাতেই বিজেপি-র আধিপত্য ছিল। এই অবস্থায় হারানো জমি পুনরুদ্ধারে মরিয়া অনুব্রত মণ্ডল। প্রতিটি বিধানসভা এলাকা ধরে কর্মিসভা করতে শুরু করে দিয়েছেন তিনি। কারণ সামনের বছরই পুরভোট। সেখানে ভাল ফল না করতে পারলে কর্মীদের মনোবল তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। বিজেপি নিয়ে কর্মীদের মধ্যে তৈরি হওয়া ভীতি কাটাতেই তিনি সিপিএম-কে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে মনে করছেন দলের নেতারা। 

রবিবার নলহাটির হরিপ্রসাদ হাইস্কুলে বুথভিত্তিক সম্মেলনে কয়েকটি বুথে দলের খারাপ ফলের কারণ জানতে চান অনুব্রত। কারণ হিসেবে অনুন্নয়ন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সঙ্গে ধর্মীয় মেরুকরণে ভোট ভাগাভাগিকেই দায়ী করেন দলের নেতারা।  সব শুনে অনুব্রত অঞ্চল সভাপতিদের নির্দেশ দেন, 'যেখানে যত সিপিএম রয়েছে, সবাইকে দলে টানতে হবে। তাহলেই আমাদের মার্জিন বাড়বে। তা না হলে সিপিএম-এর কর্মী সমর্থকরা বিজেপি- তে চলে যাচ্ছে।' এর পরেই আরও একধাপ এগিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, 'বিজেপি কোনও দলই নয়। বিধানসভায় লড়াই হবে সিপিএমের সঙ্গে।' কিন্তু যেখানে সিপিএমের কর্মী সমর্থকদের দলে টানার কথা বলছেন তখন কীভাবে সিপিএমের সঙ্গে লড়াই হবে? প্রশ্নে অনুব্রত বলেন, 'ওরা মেক আপ করে নেবে। ৩৪ বছর সরকারে ছিল। ৭০ বছর ধরে রাজনীতি করছে। ওরা ঠিক ঘাটতি পূরণ করে নেবে।' তাহলে

বিজেপি- কে আটকাতে সিপিএম- কে কি তৃণমূল সহযোগিতা করবে? অনুব্রত বলেন, 'মিটিং, মিছিল, সভা করলে চাইলে অবশ্যই সহযোগিতা করব। লোক চাইলেই দেব। সভা করলেই লোক পাবে।'

অনুব্রতর প্রশংসা শুনে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম বলেন, 'এক সময় উনি সিপিএমকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখছিলেন। যাই হোক এখন খালি চোখে দেখতে পাচ্ছেন। ওনাকে ধন্যবাদ। উনি যখন আমাদের লোক দেখতে পাচ্ছেন তখন লোক ভাড়া নিতে যাব কেন?' বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডল বলেন, 'তৃণমূলের সঙ্গে মানুষ নেই। তাই তো বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ বলে পেলে বাইশ। ভিখারি আবার ভিক্ষা কি দেবে! ওদের পতনের এই শুরু। তাই বিজেপি- কে আটকাতে প্রশাসনকে দিয়ে মামলা করে আটকে রাখছে। ওদের ক্ষমতায় থাকতে গেলে বাংলাদেশ থেকে লোক আনতে হবে।'
 

Share this article
click me!