সাত বছর আগে খাগরাগড়ে খোঁজ মিলেছিল জেএমবি জঙ্গিদের
তারপর থেকে বেড়েছিল বাড়িভাড়া সংক্রান্ত আইনের কড়াকড়ি
নিউটাউনের শুটআউটের ঘটনা ভয় ধরিয়েছে বর্ধমানে
একইরকম ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা
২০১৪ সাল। তারপর থেকে কেটে গিয়েছে সাত-সাতটা বছর। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ ঘটনার স্মৃতি বর্ধমানবাসীর মনে অনেকটাই ফিকে হয়ে এসেছিল। কিন্তু, তা আবার গদগদে করে দিয়েছে কলকাতায় নিউটাউনের এক আবাসনের শুটআউটের ঘটনা। নিউটাউনের অভিজাত অবাসনে গ্যাংস্টারদের আত্মগোপন, তাদের সঙ্গে পুলিশের গুলির লড়াইয়ের জেরে দেশের বিভিন্ন শহরের মতো পূর্ব বর্ধমান জেলা সদরের টাউনসিপ ও আবাসনগুলির নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। নিউটাউনের সাপুরজিতে দুই পঞ্জাবি গ্যাংস্টারের এনকাউন্টারের পর থেকেই আবাসনগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ফিরে এসেছে ২০১৪-র স্মৃতি।
এই বর্ধমান শহরের খাগড়াগড় এলাকাতেই ঘটেছিল মধ্যম মানের বিস্ফোরণ। যার তদন্ত করতে গিয়ে একেবারে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে এসেছিল। জানা গিয়েছিল, বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাত উল মুজাহিদিন (JMB), কীভাবে পশ্চিমবঙ্গের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশে হামলা চালানোর ছক কষছিল। লক্ষ্য ছিল প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খতম করা। নিউটাউনের পঞ্জাবি গ্যাংস্টারদের মতো খাগড়াগড় বিস্ফোরণে জড়িত আন্তর্জাতিক জঙ্গিরাও ভুয়ো পরিচয়েই বর্ধমান শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘাঁটি গেঁড়েছিল। সকলেজানত ওরা ভাড়াটে। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)-র হদিস মিলেছিল পশ্চিমবঙ্গ ও অসম হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত ছড়ানো জঙ্গি নেটওয়ার্কের।
নিউটাউনের সাপুরজি এলাকায় দিনকয়েক আগেই এনকাউন্টারে খতম হয়েছে দুই পাঞ্জাবি গ্যাংস্টার
ওই ঘটনার পরই অবশ্য বর্ধমান শহরে বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত নিয়মকানুন কঠোর করা হয়। বর্ধমান শহরে দুটি টাউনশিপ রয়েছে - 'উল্লাস' এবং 'রেনেসাঁ'। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন বহুতল আবাসন। নিয়মানুসারে ভাড়াটে থাকলে তাদের পরিচয় আবাসন ও টাউনশিপ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা রাখতে হয়। তাহলে নিউটাউনে গ্যাংস্টারদের এনকাউন্টার দেখে ভয় পাচ্ছেন কেন, এই জেলা শহরের বাসিন্দারা? কেন বর্ধমানের বিভিন্ন আবাসন ও টাউনশিপের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে?
কাশিনাথ গঙ্গোপাধ্য়ায় বা গৌরব সমাদ্দারদের মতো পুরোনো আবাসিকদে অভিযোগ, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ঘটনা যত পুরনো হয়েছে ততই নিয়ম নীতি নিয়ে এসেছে উদাসীনতা। তাঁদের অভিযোগ, অনেকক্ষেত্রেই টাউনশিপ দুটিতে এবং আবাসনগুলিতে ফ্ল্যাটের মালিকরা অন্যকে বাড়ি ভাড়া দেন। অথচ সেই ভাড়াটেদের পরিচয় জানা যায় না।
ভাড়াটেদের পরিচয় নথিভুক্ত করা হয় না। আবার এই সব আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন অফিসও চলে। সেইসব অফিসে কারা আসে, কারা যায় - তার কোনও নথিও থাকে না। তাই তাঁদের আশঙ্কা বর্ধমান শহরেও নিউটাউনের মতো কোনও গ্যাংস্টার বা জঙ্গি সংগঠনের সদস্য আত্মগোপন করে থাকতে পারে। এই বিষয়ে প্রশাসন আরও কড়া হোক, এটাই চাইছেন তাঁরা।