কিছুদিন আগেই BJP-র বিরুদ্ধে মুখ খুলে তৃণমূলে ফেরার জল্পনা বাড়িয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর শুক্রবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল রায়। আর তাঁর তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পরই ফের রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। এবার তার মাঝেই আজ রাজীবের বিরুদ্ধে হাওড়ার ডোমজুড়ে পোস্টার পড়ল। তবে সেখানে রাজীবের কোনও নাম ছিল না।
শনিবার সকালে ডোমজুড়ের বাঁকড়া এলাকায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিরুদ্ধে পোস্টার এবং ফ্লেক্স দেখা যায়। যদিও সেখানে তাঁর কোনও নাম ছিল না। এর আগেও একই ধরনের একাধিক পোস্টার পড়েছিল ওই এলাকায়। যদিও সেগুলিতে বিজেপি নেতার নাম ছিল। আর এই পোস্টারে লেখা রয়েছে, "বাংলার মীরজাফর গদ্দার বেইমানদের কোনও ঠাঁই নেই।" পোস্টারের নিচে লেখা ডোমজুড় কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেস।
নির্বাচনী প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছিলেন রাজীব। এমনকী, রাজীবকেও নিশানা করতে ছাড়েননি মমতা। ডোমজুড়ের সভামঞ্চ থেকে মমতা বলেছিলেন, "ডোমজুড়ের কাছে ক্ষমা চাইছি। কারণ, গত বছর এখানে গদ্দারকে প্রার্থী করেছিলাম। গদ্দার জনগণের টাকা মেরেছেন। আমায় বলেছিল, ওকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট দেওয়া হোক। যাতে আরও কমিশন নিতে পারে। সেচ দফতরে দুর্নীতি করে অনেক টাকা করেছে। অভিযোগ আসায় ওকে সেচ দফতর থেকে সরিয়ে দিই। পরে বন দফতর দিই। বুঝতে পারিনি তার ভিতরে এত প্যাঁচ রয়েছে। কলকাতায়, দুবাইয়ে অনেক সম্পত্তি করেছে। আগে জানলে ওকে অনেক আগেই সরিয়ে দিতাম।"
কিন্তু, একুশের নির্বাচনের পরই খানিকটা বেসুরো রাজীব। সম্প্রতি টুইটারে তিনি লেখেন, "কথায় কথায় দিল্লি বা ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে তা বাংলার মানুষ ভাল চোখে নেবে না।" আর তারপর থেকেই তাঁর তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। কিন্তু, গতকাল মুকুলকে বরণ করে নেওয়ার সময় সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, "যাঁরা গদ্দারি করেছেন, চরমপন্থী, নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছেন, তাঁদের নেব না।" এই সঙ্গে আগামীদিনে আরও অনেকেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
আর মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পর ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রে বাঁকড়া কবর পাড়া এলাকায় এই পোস্টার রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। পোস্টারে কোনও নাম না থাকলেও তা আদতে রাজীবের বিরুদ্ধেই দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আর তাঁকে যাতে ফের না দলে নেওয়া হয় তার জন্য ওই পোস্টারের মাধ্যমেই তৃণমূল সুপ্রিমোকে অনুরোধ করা হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বকে বার্তা দিতেই এই পোস্টার বলে মনে করা হচ্ছে।