নববর্ষে কাশ্মীরি শাল, মন্ত্রী- আমলাদের উপহার দিতেই ১২ লক্ষ খরচ বীরভূমে

Published : Jan 05, 2020, 12:50 PM IST
নববর্ষে কাশ্মীরি শাল, মন্ত্রী- আমলাদের উপহার দিতেই ১২ লক্ষ খরচ বীরভূমে

সংক্ষিপ্ত

রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের নববর্ষের উপহার উপহার দেবে বীরভূম জেলা পরিষদ রাজ্যে আমলাদেরও দেওয়া হবে উপহার সবমিলিয়ে খরচ সাড়ে বারো লক্ষ টাকা  

সাড়ে বারো লক্ষ টাকা খরচ করে রাজ্যের আমলা, মন্ত্রীদের নববর্ষের উপহার দেবে বীরভূম জেলা পরিষদ। এ নিয়ে শুরু হয়েছে জোড় বিতর্ক। বিরোধীরা হইচই করলেও এতে অন্যায় কিছু দেখছেন না সহকারী সভাধিপতি নন্দেশ্বর মণ্ডল। এই উপহারকে নিছক সৌজন্য হিসেবেই দাবি করেছেন জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা।

গত বছর নব নির্বাচিত পরিষদ সদস্যদের বিয়াল্লিশটি শাল-চাদর দিয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। শাল কেনার দেড় লক্ষ টাকার বিল এখনও অনুমোদন করেনি জেলা পরিষদ। কারণ অনুমোদন ছাড়াই এত টাকার উপহার কেনা নিয়ম বহির্ভূত বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু সভাধিপতি বিকাশবাবুর অনুপস্থিতিতে শুক্রবার সাড়ে ১২ লক্ষ টাকার ওপর বিলের অনুমোদন দিলেন সহকারী সভাধিপতি নন্দেশ্বর মণ্ডল। উপহারের তালিকায় থাকছে তিন হাজার টাকা মূল্যের একটি ব্যাগ, তৃণমূলের আশ্রয়ে থাকা কাশ্মীরি শালওয়ালাদের কাছ থেকে প্রায় দু’লক্ষ টাকার শাল। সঙ্গে নতুন বছরের দামি ডায়েরি, পেন- সহ অন্যান্য সামগ্রী। নন্দেশ্বরবাবু জানান, আগামী ৭ জানুয়ারি থেকে এই সমস্ত উপহার পদাধিকারীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এমনকী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও জেলা পরিষদের তরফে তা পাঠানো হবে। জেলাশাসক থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের অনান্য পদাধিকারীদেরও একই উপহার দেওয়া হবে। নন্দেশ্বরবাবুর দাবি, 'বছরের শুরুতে এই উপহার দেওয়ার মধ্যে অন্যায় কিছু নেই।'

আরও পড়ুন- তারাপীঠ মন্দিরেই মদের আসর, ছবি ভাইরাল হতেই তৎপর কর্তৃপক্ষ

আরও পড়ুন- দু' বছর পড়ে মর্গের সামনে, অসুস্থ মহিলার সহায় দিনমজুর স্বপন

কিন্তু গতবছর যেখানে দেড় লক্ষ টাকার বিল অনুমোদন হয়নি, সেখানে কীভাবে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা উপহার কেনার জন্য বরাদ্দ করা হল? নন্দেশ্বরবাবুর দাবি, উপহার কেনার সিদ্ধান্তে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন দিয়েছে জেলা পরিষদের কর্মসমিতি। তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে অবশ্য অন্য কথা শোনা যাচ্ছে। বীরভূমের রাজনীতিতে সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর সঙ্গে সহকারী সভাধিপতি নন্দেশ্বর মণ্ডলের সম্পর্ক একেবারেই ভাল নয়। উপহার কেনার জন্য বিল অনুমোদনের ক্ষেত্রেও সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। 

জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, 'আমরা প্রথম থেকেই দাবি করে এসেছি যে বিরোধীশূন্য জেলা পরিষদে নিজেদের উন্নয়ন ছাড়া জনগণের উন্নয়ন হবে না। সাড়ে ১২ লক্ষ টাকায় অনেক উন্নয়ন হত। ওই টাকায় কোনও প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সারা মাসের পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যেত।' তাঁর দাবি, তিনি সভাধিপতি থাকাকালিন কোনওদিনও এমন ঘটনা ঘটেনি। তৃণমূলের
নেতারা বলছেন, অনেক সময়ই জেলা পরিষদে কাজ করা ঠিকাদাররা এই ধরনের উপহার দেওয়ার ব্যবস্থা করে। কিন্তু বীরভূমে 'কাটমানি' দিয়ে কাজ পাওয়ার ঠেলায় এখন আর ঠিকাদাররাও নতুন বছরের উপহার দিতে চান না। জেলাশাসকের উদ্যোগে এভাবে নববর্ষের উপহার কিনে রাজ্য সরকারের মন্ত্রী, আমলাদের পাঠানোর সিদ্ধান্ত তাই নজিরবিহীন।

জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন,'এই টাকা বরাদ্দ, উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় জেলা পরিষদের অর্থ দফতরের স্থায়ী সমিতির সিদ্ধান্তে। জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে এই টাকা দেওয়া হবে।' তিনি জানান, ডায়েরি ও ব্যাগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহল। তাছাড়া 'সামান্য' এই খরচ করে সৌজন্য দেখানোর মধ্যে খারাপ কিছু নেই বলেই মত জেলাশাসকের। 

PREV
click me!

Recommended Stories

LIVE NEWS UPDATE: RBI MPC Meeting - এখন বাড়ি গাড়ি কেনা আরও হবে সহজ আরবিআই কমিয়েছে রেপো রেট বেসিস পয়েন্ট
রাজ্যজুড়ে আরও বাড়বে শীতের আমেজ, উইকএন্ডে কেমন থাকবে আবহাওয়া? রইল আবহাওয়ার বিরাট আপডেট