অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্শ ভার্মা জানিয়ে দিয়েছেন, যে বিরোধী দলের দুষ্কৃতীদের গুলিতে নয়। নিজের বাড়িতে মজুত করে রাখা বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে 'ভুল' করে গুলি চালানোর ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার গভীর রাতে ইটাহার থানার (Itahar Police Station) রাজগঞ্জ এলাকায় বিজেপির যুব মোর্চার সহ সভাপতি মিঠুন ঘোষের (Mithun Ghosh) মৃত্যুর ঘটনায় নাটকীয় মোড়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ ছিল, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের (TMC Miscreants) গুলিতেই মিঠুনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও আজ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্শ ভার্মা জানিয়ে দিয়েছেন, যে বিরোধী দলের দুষ্কৃতীদের গুলিতে নয়। নিজের বাড়িতে মজুত করে রাখা বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে 'ভুল' করে গুলি চালানোর ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার রাতে মিঠুন তাঁর দুই বন্ধু সন্তোষ মহন্ত ও সুকুমার ঘোষের সঙ্গে এলাকার একটি হোটেলে রাতের (Dinner) খাবার খেয়েছিলেন। এরপর দুই বন্ধু মিঠুনকে তাঁর বাড়িতে বাইকে করে নামিয়ে দিয়ে যান। সেই সময়ই মিঠুন তাঁদের জানিয়েছিলেন যে তাঁর কাছে ২টি আগ্নেয়াস্ত্র (firearms) রয়েছে। তা শুনে সন্তোষ ও সুকুমার সেগুলি দেখাতে বলেন। এরপর মিঠুন বাড়ি থেকে ১টি পাইপগান ও ১টি ৯এমএম পিস্তল নিয়ে এসে তাঁদের দেখান। আগ্নেয়াস্ত্রগুলি হাতে নিয়ে দেখার সময় হটাৎ করেই সুকুমারের হাতে থাকা পিস্তল থেকে এক রাউন্ড গুলি বেরিয়ে যায়। সেই গুলি লাগে মিঠুনের পেটে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
আরও পড়ুন- গড়িয়াহাটে জোড়া খুন, একতলায় বাড়ির মালিক ও দোতলায় উদ্ধার গাড়ি চালকের রক্তাক্ত দেহ
আরও পড়ুন- বাংলাদেশের দুর্গাপুজোয় হিংসা, আজ জেলায় জেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে বিজেপি
এই ঘটনা দেখার পরই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেন সন্তোষ ও সুকুমার। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও যোগাযোগ নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এদিকে এই ঘটনার পরই তৎপর হয়ে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। রাতেই এলাকায় চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়েছিল। আজ সকালে সন্তোষকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় ওই একই কথা জানিয়েছেন তিনি। আজ তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। পাশাপাশি কী কারণে মিঠুন বাড়িতে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করেছিল তা তদন্তের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। সুকুমারের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে।
যদিও মৃত বিজেপি নেতার পরিবারের অভিযোগ ছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের গুলিতেই মিঠুনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মা দাবি করেছিলেন, অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে। তবে কেন মিঠুনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তার সঠিক কারণ বলতে পারেননি গ্রামের বাসিন্দা থেকে পরিবারের সদস্য কেউই। এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেছিলেন ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক মুশারফ হুসেন। এরপরই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সন্তোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখনই মিঠুনের বেআইনি অস্ত্র মজুতের কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা।