
অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ট বোলপুর পুরসভা কর্মীর বাড়িতে বিদ্যুৎবরণ গায়েনের এবার হানা দিল সিবিআই। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তির অভিযোগ তুলেই সিবিআই হানা দেয় পুরসভা কর্মীর বাড়িতে। বোলপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। একই এলাকায় দুটি বিশাল বাড়ির মালিক বিদ্যুৎবরণ গায়ের। সিবিআই সূত্রের খবর বিদ্যুৎবরণ গায়েনের সঙ্গে যোগ রয়েছে গরু পাচারকাণ্ডের। আর সেই কারণে পালাবদলের পর অনুব্রত মণ্ডলের কৃপায় ফুলেফেঁপে উঠেছেন পুরসভার কর্মী। এলাকায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে বিদ্যুৎবরণ গায়ের অনুব্রত মণ্ডলের এতটাই ঘনিষ্ট ছিলেন যে তাঁকে 'বাবা' বলে সম্বোধন করতেন।
২০১১ সালের আগে সাধারণ একজন খাসালি হিসেবেই জীবন কাটত বিদ্যুৎবরণ গায়েনের। তারপরই বোলপুর পুরসভায় চাকরি। আর সেই সূত্র ধরেই অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় তাঁর। আদতে তাঁরা জয়নগরের বাসিন্দা। বিদ্যুৎ গায়েনের বাবা বিশ্বভারতীর একজন সাধারণ কর্মী ছিলেন। সেই সূত্রধরেই বোলপুরে আসেন বিদ্যুৎ। কিন্তু এই রাজ্যে পালাবদল খুলে দেয় গায়েন পরিবারের ভাগ্য। অনুব্রত মণ্ডলের ছায়া সঙ্গী হিসেবেই পরিচিত হন বিদ্যুৎ। বোলপুর পুরসভার ২২ নম্হর ওয়ার্ডের কালিকাপুরে দুটি দোতলা বাড়ি রয়েছে বিদ্যুতের- তেমনই জানিয়েছে সূত্র। একটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সপরিবারে থাকতেন। আর একটিতে নাকি থাকত অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষীরা।
সিবিআই সূত্রের খবর পালাবদলের পর রাতারাতি একাধিক সম্পত্তির মালিক হয়ে যায় বিদ্যুৎ গায়েন। দুটি বড়ি অত্যান্ত বিলাসবহুল। এয়ারকন্ডিশান মেশিন থেকে শুরু করে দামি দামি আসবাবপত্র সবই রয়েছে।
সিবিআই সূত্রের খবর রবিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ সিবিআই আধিকারিকরা হানা দেয় বোলপুরের কালিকাপুরের বাড়িতে। সিবিআই-এর আধিকারিকদের যে দলটি ভোল ব্যোম রাইসমিলে হানা দিয়েছিল সেই দলটি এদিন হানা দেয় বিদ্যুৎ গায়েনের বাড়িতে। সূত্রের খবর ভোলে ব্যোম রাইসমিল সহ আরও একটি সংস্থার মালিকানা রয়েছে তাঁর নামে। রাইসমিলে তাঁর যাতায়াত ছিল বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন। কিন্তু কি করে এই বিশাল সম্পত্তি হল বিদ্যুৎ গায়েনের- তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কারণ এই সব সম্পত্তি ২০১১ সালের পর কেনা হয়েছে। কিন্তু একজন পুরসভাকর্মী হয়ে কী করে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতে পালেন? পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে গরুপাচারকাণ্ডে বিদ্যুর গায়েনের যোগা রয়েছে কিনা? এজাতীয় একাধিক প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানেই এদিন সিপিআই পুরসভা কর্মীর বাড়িতে হানা দেয়।
অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই সামনে আসছে নামে বেনামে তাঁর প্রচুর সম্পত্তি। পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে তাঁর আত্মীয়দেরও অগাধ সম্পত্তি। দেহরক্ষী থেকে শুরু করে অনুগত অনেকেই সম্পত্তির তালিকা লম্বা হয়েছে ২০১১ সালের পর। তাতেই সিবিআই কর্তাদের অনুমান গরুপাচারকাণ্ডের টাকা এভাবেই গেছে অনুব্রতর ঘনিষ্ট পুরসভা কর্মী বিদ্যুৎবরণ গায়েনের খপ্পরে।