হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। ধৃতদের ইতিমধ্যেই চার দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রাণাঘাট আদালত।
হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। ধৃতদের ইতিমধ্যেই চার দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রাণাঘাট আদালত। হাঁসখালির নাবালিকাকে ঘিরে একটি অডিও ভাইরাল হয়, সেখানে ধৃতদের মধ্যে কথোপকথন ছিল। সূত্রের খবর, ধৃত তিনজনের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাট, হুমকি দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে। এরপরেই তাঁদের খোঁজে নেমে পড়ে সিবিআই। এই হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।
সূত্রে খবর, ৪ এপ্রিল রাতে জন্মদিনের পার্টিতে ডাকা হয়েছিল ওই নাবালিকাকে। এরপর জন্মদিনে ডেকে তাকে মদ্যপান করায় ব্রজগোপাল। এরপরেই সে এবং তার বন্ধুরা মিলে গণধর্ষণ করে। যৌন নির্যাতন এতটাই হয়েছিল যে, নির্যাতিতার গোপনাঙ্গ থেকে ব্যাপক রক্তপাত ঘটে। রক্তে ভিজে যায় অন্তর্বাস। রাতে এক মহিলাকে দিয়ে নাবালিকা প্রেমিকাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সে। অভিযোগ এরপরেই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে ওই নাবালিকা। এদিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেয় ব্রজগোপাল। এরপরেই অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার।এদিকে নৃশংসঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। অপরাধ ঢাকতে দেহ সৎকারে বাধ্য করে বজ্রগোপাল। তাই মাঝে কয়েকদিন কেউ কিছু জানতে পারেনি।
আরও পড়ুন, হাঁসখালিকাণ্ডে রিপোর্ট পড়ে কী নির্দেশ দিলেন নাড্ডা, এবার কি বড় পদক্ষেপের পথে বিজেপি
ঘটনার পরেই শনিবার হাঁসখালি থানায় নাবালিকার পরিবারের তরফে অভিযোগে জানানো হয়। মেয়ের মৃত্যুর পরে বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে জোর করে দাহ করে দেওয়া হয়েছে বলে ভয়াবহ অভিযোগ ওঠে। আর তাতে জড়িত ছিল ব্রজগোপাল এবং তার দলবল। এরপরেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে ব্রজগোপালকে গ্রেফতারের দাবি ওঠে। রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করে হাঁসখালি থানার পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মৃতের মা-বাবা গণধর্ষণের অভিযোগ করলেও ,এফআইআর-এ ধর্ষণের অভিযোগ করেছে হাঁসখালি থানার পুলিশ। তাঁছাড়া ৪ দিন ধরে কী করেছে হাসখালি থানার পুলিশ শেই প্রশ্নও উঠেছে। এরপরেই ভরসা ওঠে রাজ্য পুলিশের উপর থেকে হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন, অটোয় নাবালিকার গোপানাঙ্গে স্পর্শ, মানিকতলায় শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার খোদ পুলিশই
১২ এপ্রিল হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে একাধিকবার ঘটনাস্থলে গিয়েছেন তদন্তকারীর দল। মৃতার পরিবার পরিজনদের বয়ান রেকর্ড হয়েছে। শ্মশানস্থল এবং বাড়ি থেকেও নমুনা উদ্ধার করেছেন সিবিআই-র ফরেন্সিক টিম। এরই পাশাপাশি বেড়ে চলে গ্রেফতারের সংখ্যা। হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের ভার নেওয়ার পরে দুই জন ধৃতকে পুলিশের হাত খেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থা। এরমধ্য়ে তৃণমূল নেতার ছেলেও রয়েছে। তাঁদের জেরা করেই উঠে আসে একের পর এক নাম। এরপরেই আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার মৃতদেহকে দাহ করার সময় জোর খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। এবং মৃতার পরিবারকে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন, 'মোদী-যোগী চুপ কেন', উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে পৌঁছে সরব সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস