'দাদার কীর্তি'-র কেদারের মতোই স্বভাব ছিল বিধানের, মন খারাপ ধারাপাড়ার

  • তাপস পালের মৃত্যুতে চন্দননগরেও শোকের ছায়া
  • চন্দননগরের ধারাপাড়াতেই বড় হয়েছেন তাপস
  • অভিনেতার স্মৃতিচারণায় ছোটবেলার বন্ধুরা
  • খুবই নরম স্বভাবের ছিলেন তাপস, দাবি এলাকার পুরনো বাসিন্দাদের
     

কয়েক বছর আগে সাংসদ থাকাকালীন বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রবল সমালোচিত হতে হয়েছিল তাঁকে। চন্দননগরের ধারাপাড়ার পুরনো বাসিন্দারা কিন্তু বলছেন, বাস্তবের তাপস পাল আসলে এক্বেবারে অন্য মানুষ। যে কারণে 'দাদার কীর্তি'-র সহজ সরল কেদার চাটুজ্জের সঙ্গে নিজেদের ছোটবেলার বন্ধু বিধানের অনেকটা মিল খুঁজে পেতেন তাঁর বন্ধুরা। 

দীর্ঘদিন ধরেই চন্দননগরের ধারাপাড়ার সঙ্গে আর যোগাযোগ ছিল না তাপস পালের। কিন্তু তাঁর ছেলেবেলা থেকে শুরু করে সিনেমায় পা রাখা পর্যন্ত গোটা সময়টাই কেটেছিল চন্দননগরে। সেখানে আজও তালাবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাপস পালের পৈর্তৃক বাড়ি। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদে এই বাড়ি নিয়ে আইনি লড়াইও হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তাপস পালের মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পরে সেই বাড়ির সামনেই ভিড় করেছিলেন অভিনেতার ছোটবেলার বন্ধু এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। 

Latest Videos

আরও পড়ুন- প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পাল, শোকের ছায়া টলিপাড়ায়

আরও পড়ুন- কান্নায় ভেঙে পড়লেন দেবশ্রী, তাপসের মৃত্যু সংবাদ বিশ্বাস হচ্ছে না অভিনেত্রীর

তাপস পালের বাবা গজেন্দ্র চন্দ্র পাল ছিলেন চন্দননগর হাসপাতালের চিকিৎসক। বাবা, মা ছাড়াও চন্দননগরের বাড়িতে দুই দিদি এবং দুই বোনের সঙ্গে থাকতেন তাপস। চন্দননগরেরই কানাইলাল বিদ্যামন্দিরে ছোটবেলায় পড়াশোনা করেন তাপস। এর পর চুঁচুড়া মহসিন কলেজে ভর্তি হন তিনি। বরাবরই তাপস পালকে নরম মনের সহজ সরল ছেলে হিসেবেই পেয়েছেন ধারাপাড়ার বাসিন্দারা। এলাকায় বিধান নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। এর পর সিনেমায় সুযোগ পাওয়ার পরেও চন্দননগরে যাতায়াত ছিল তাঁর। কিন্তু জনপ্রিয়তা বাড়তে আস্তে আস্তে ধারাপাড়ার সঙ্গে যোগাযোগ কমে তাপসের। গত কয়েক বছরে সেই যোগাযোগ একেবারেই ছিন্ন হয়েছিল। কিন্তু তাপস পালকে আজও ভুলতে পারেনি ধারাপাড়া। রোজভ্যালি কাণ্ডে তাঁর গ্রেফতারিতে যেমন ব্যথিত হয়েছিল ধারাপাড়া, তেমনই টিভি-র পর্দায় ভগ্নপ্রায় চেহারার তাপসকে দেখেও মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল তাঁর ছোটবেলার বন্ধুদের। মঙ্গলবার সকালে চরম দুঃসংবাদ পাওয়ার পর তাই স্মৃতি রোমন্থন করছিলেন প্রয়াত অভিনেতার ছোটবেলার বন্ধুরা। 

প্রদীপ ঘোষ নামে তাপস পালের ছোটবেলার এক বন্ধুর কথায়, এক ঘটনায় বিতর্কিত কিছু বলে ফেলায় ওর অনেক বদনাম করা হয়েছে। কিন্তু ওর চরিত্রটা সম্পূর্ণ উল্টো। 'দাদার কীর্তি'-তে যে চরিত্রে অভিনয় করেছিল, তাপস পালের স্বভাবটা ঠিক সেরকমই। একসঙ্গে ফুটবল খেলা, পুকুরে সাঁতার কাটা, সবই একসঙ্গে করেছি আমরা। একদিন তো সাঁতার কাটতে গিয়েই ডুবেই যাচ্ছিল। আমার সাইকেল নিয়ে মাঝেমধ্যে বাজারেও চলে যেত।' সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর ভুবনেশ্বরের জেলে থাকাকালীনও তাপস পালের সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন প্রদীপবাবু। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি যে ছোটবেলার বন্ধু বিদায় নেবে, তা বুঝতে পারেননি তাঁর ছোটবেলার বন্ধুরাও। 

প্রয়াত অভিনেতার বাড়িতেই এক সময়ে বেশ কয়েকবছর পরিচারিকার কাজ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা রেবা রায়। তখন মা এবং বোনেদের সঙ্গে চন্দননগরের বাড়িতেই থাকতেন তাপস।  প্রয়াত অভিনেতার বন্ধুদের মতোই তিনিও স্বীকার করলেন, খুবই নরম স্বভাবের মানুষ ছিলেন তাপস। যাঁকে তাঁর মা খোকা বলে ডাকতেন। রেবাদেবীর কথায়, লুচির সঙ্গে কুমড়ো- আলুর তরকারি খেতে ভালবাসতেন তাপস। আর বিকেলে ভালবাসতেন মোগলাই পরোটা খেতে। মা এবং বোনেরাই আদর করে এই সমস্ত খাবার বানিয়ে দিতেন তাপসকে। 

তাপস পাল জনপ্রিয়তার শিখরে ওঠায় চন্দননগরের সঙ্গে যোগাযোগ কমেছিল। কিন্তু তাপসের সাফল্যে চন্দননগরের ধারাপাড়ার বাসিন্দারা যেমন উৎফুল্ল হয়েছেন, সেরকমই তাঁকে গ্রেফতার হতে দেখে মন খারাপ হয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের। তাপসের পালের মৃত্য়ুসংবাদ পেয়ে ধারাপাড়ার বাসিন্দারা তাই বলছেন, শেষটা এভাবে না হলেও পারত। 

Share this article
click me!

Latest Videos

গোটা ভারতবর্ষে কে রোহিঙ্গাদের সাপ্লাই দিচ্ছে! শুভেন্দুর উত্তরে চমকে উঠবেন | Suvendu Adhikari
ভাটপাড়ায় প্রোমোটারের 'দাদাগিরি', আতঙ্কে জমির মালিক, কি বলছে পুরসভা! দেখুন | Bhatpara News
Live: মথুরাপুরে সদস্যতা অভিযান অগ্নিমিত্রা পালের, দেখুন সরাসরি
'আমি মারা গেলে আমার যেন স্ট্যাচু না হয়' দলের উদ্দেশ্যে বার্তা মমতার
Mamata Banerjee Live: নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা, দেখুন সরাসরি