জিয়াগঞ্জের পালপাড়ায় প্রায় ৪০টি পরিবার মাটির প্রদীপ, ভাঁড় তৈরি করেই সংসার চালায়। দীপাবলি এগিয়ে আসায় এখন তাঁদের ব্যস্ততা আরও বেড়েছে।
চিনা সামগ্রী বয়কটের (Chinese lights banned) ডাককে হাতিয়ার করেই এবার আশার আলোর (Good business) মুখ দেখছে মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্যবাহী জিয়াগঞ্জ, জঙ্গিপুর, সুতি এলাকার মৃৎ শিল্পীরা (earthen lamp artisans)। সেই লক্ষ্যে এবারের দীপাবলিতে(KaliPuja) নতুন করে মাটির প্রদীপ তৈরীর মধ্যে দিয়ে সাবেকি ভাবে দীপাবলি জেলাজুড়ে পালনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। ফলে জোরকদমে চলছে মাটির হরেক রকম প্রদীপ তৈরীর কাজ।
কারিগররা মনে করছেন, আমজনতার মধ্যে চিনের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে। তার জন্যই সে দেশের সামগ্রী ছেড়ে আবার মাটির প্রদীপ কিনবে ক্রেতারা। ফলস্বরূপ এখন থেকেই ব্যাপকহারে এদের কাছে সব খুচরো ও পাইকারি বাজার থেকে অর্ডার আসতে শুরু করেছে। জিয়াগঞ্জের পালপাড়ায় প্রায় ৪০টি পরিবার মাটির প্রদীপ, ভাঁড় তৈরি করেই সংসার চালায়। দীপাবলি এগিয়ে আসায় এখন তাঁদের ব্যস্ততা আরও বেড়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা কাজ করে চলেছেন।
বাড়ির মহিলারাও এই কাজে সামিল হয়েছেন। কেউ কেউ ৮-২০হাজার প্রদীপ তৈরি করে রাখছেন। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রদীপ তৈরি করে আসছেন বিনোদ পাল। তিনি বলেন, চায়না এলইডি লাইট বর্জনের ডাক দেওয়ার ফলে আগের চেয়ে প্রদীপের চাহিদা এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে। তবে দাম খুব বেশি বাড়েনি। বাজারে ১০০টি প্রদীপ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করা হয়। চাহিদা বেশি থাকায় সমস্যা হয় না। পুজোর তিন-চারদিন আগে থেকে বিক্রি বেড়ে যায়। আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা প্রদীপ কিনে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা নিজেদের এলাকায় সেগুলো বিক্রি করে। তারা কয়েকদিন আগেই অর্ডার দিয়েছে। দু-তিনদিনের মধ্যেই তারা এসে প্রদীপ নিয়ে যাবে। আমরা নিজেরাও বাজারে গিয়ে তা বিক্রি করি। আমাদের এলাকায় ছোট থেকেই বাড়ির ছেলে-মেয়েদের মাটির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়"।
শাঁখ কেন তিনবার বাজানো হয় জানেন, রয়েছে অদ্ভুত কারণ
Bank holidays November 2021- নভেম্বরে ১৭ দিন বন্ধ থাকবে ব্যাঙ্ক, দেখে নিন বাংলায় কবে
এই পাঁচ বলিউড সেলিব্রিটির কেরিয়ার প্রায় নষ্ট করে দিয়েছিলেন সলমন খান
আর এক মহিলা শিল্পী মিনতি পাল বলেন, মাঝে চিনের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী দিয়েই দীপাবলির রাত অনেকেই আলোকিত করতেন। প্লাস্টিকের প্রদীপ সে দেশ থেকে আসত। কিন্তু এখন চিনের প্রতি সকলেরই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাই তাদের তৈরি সামগ্রীও পুজোতে কেউই ব্যবহার করতে চাইছে না। সেই কারণে মাটির প্রদীপের চাহিদা এখন বেড়ে গিয়েছে। এভাবে ব্যবসা হলে আমাদের ভালোই হবে। কয়েকদিন আগে থেকেই পুজোর জন্য আমরা প্রদীপ তৈরি করতে শুরু করেছি। প্রদীপের পাশাপাশি এখন মাটির ভাঁড়ের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে। অনেকেই প্লাস্টিকের কাপ ব্যবহার করতে চাইছেন না। তাই এই শিল্প ধীরে ধীরে আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে"।
জিয়াগঞ্জের ক্রেতা বিক্রম হাজরা বলেন, আমরা চাই না বাড়িতে চিনা এলইডি লাইট থাকুক। বরং আমাদের এলাকায় হরেক রকম বাহারি ঐতিহ্যবাহী প্রদীপ কিনেই এবার দীপাবলিতে ঘর সাজাবো"।