হাঁসখালির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্য়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত, রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই বললেন নদিয়ার বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও তোপ দাগেন তিনি।
হাঁসখালির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্য়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত, রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই বললেন নদিয়ার বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে কড়া সমালোচনা করেন নদিয়ার রাণাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে এদিন বিজেপি সাংসদ বলেন, 'তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রথমেই বলে বসলেন, মেয়েটির প্রণয় ঘটিত সম্পর্ক ছিল।সে অন্তঃসত্ত্বা ছিল কিনা, কীকরে প্রমাণ করবেন, তার মৃত দেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এই মন্তব্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কীভাবে করলেন , তা সত্যিই বলার ভাষা রাখে না। মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের জন্য এখনই ক্ষমা চাওয়া উচিত।' পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও তোপ দাগেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে হাঁসখালির ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন , হাঁসখালিতে ধর্ষণ বলবেন না কি প্রেম না অন্তঃসত্ত্বা নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন। আমি পুলিশকে বলেছি, ঘটনাটি কী। ঘটনাটা অত্যন্ত খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু, শুনেছি ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটির নাকি লাভ অ্যাফেয়ার ছিল।'তিনি আরও বলেন, 'মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখে। অভিযোগ জানানো হয়েছে ১০ তারিখে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে তবে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন', প্রশ্ন তোলেন মমতা। তিনি আরও বলেন, 'কাউকে কিছু না জানিয়ে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন কী ভাবে এর তদন্ত করবে পুলিশ' পরিবারের লোকজন তৃণমূলের সদস্য হিসেবে অভিযোগ ওঠার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন,'কারও বাবা-দাদা যদি তৃণমূল করে আর সেই ছেলে যদি প্রেম করে তাহলে কার কী করার আছে। বাংলার রাজ্যটায় সবাই তৃণমূল। কী করবেন বলুন। তৃণমূলকে টানার কী দরকার? তৃণমূল শুনলেই চোখে সর্ষে ফুল দেখছে।' ইতিমধ্যেই হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে উত্তাল রাজ্য। কারণ মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলে বলেছেন, রেপড, প্রেগন্যান্ট নাকি লাভ অ্য়াফেয়ার্স। এই মন্তব্যের পরেই বিশেষ করে উত্তাল হয়ে সারা বাংলা।
সূত্রে খবর, ৪ এপ্রিল রাতে জন্মদিনের পার্টিতে ডাকা হয়েছিল ওই নাবালিকাকে। এরপর জন্মদিনে ডেকে তাকে মদ্যপান করায় ব্রজগোপাল। এরপরেই সে এবং তার বন্ধুরা মিলে গণধর্ষণ করে। যৌন নির্যাতন এতটাই হয়েছিল যে, নির্যাতিতার গোপনাঙ্গ থেকে ব্যাপক রক্তপাত ঘটে। রক্তে ভিজে যায় অন্তর্বাস। রাতে এক মহিলাকে দিয়ে নাবালিকা প্রেমিকাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সে। অভিযোগ এরপরেই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে ওই নাবালিকা। এদিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেয় ব্রজগোপাল। এরপরেই অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার।এদিকে নৃশংসঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। অপরাধ ঢাকতে দেহ সৎকারে বাধ্য করে বজ্রগোপাল। তাই মাঝে কয়েকদিন কেউ কিছু জানতে পারেনি। তবে ইতিমধ্য়েই হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডের অভিযুক্তদে সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।
আরও পড়ুন, আজই ঘূর্ণাবর্ত রূপ নিতে পারে সাইক্লোন অশনিতে, কলকাতাতেই প্রস্তুত এনডিআরএফ-র ১৭ টিম
আরও পড়ুন, ঘূর্ণীঝড়ের জের, ভাঙন না রুখলে বিলীন হবে কপিল মুনির আশ্রম, হারাবে সুপ্রাচীন গঙ্গাসাগর