ভাঙন রুখতে না পারলে বিলীন হয়ে যাবে এই মন্দিরও। অস্তিত্ব হারাতে পারে সুপ্রাচীন তীর্থভূমি গঙ্গাসাগার। ঘূর্ণিঝড় অশনি নিয়ে চিন্তায় পড়েছে প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় অশনির আশঙ্কায় কপিল মুনির আশ্রম রক্ষায় চিন্তায় পড়েছে প্রশাসন। আমফান এবং ইয়াসে বুক পেতে রক্ষা করা গিয়েছিল। কিন্তু প্রতিনিয়তই এগিয়ে আসছে সমুদ্র। কপিল মুনি আশ্রমের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত জেলায় প্রশাসন থেকে শুরু করে এলাকাবাসী। সুন্দরবনের শিয়রে ফের ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্ক। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ তৎপরতা শুরু করেছে। ব্লক পর্যায়ে শুরু হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
প্রতিটি বিপর্যয়ে ,সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় সাগর ব্লক। কারণ এই ব্লকটি পুরোপুরি নদী এবং সমুদ্র দিয়ে ঘেরা। এই দ্বীপের অন্যতম তীর্থস্থান কপিল মুনির আশ্রম। বিগত কয়েকটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সমুদ্রতট। ভাঙনের জেরে প্রতিনিয়ত সাগরের জল এগিয়ে এসেছে। মন্দিরে জল ঢুকেছে অনেকবার। তছনছ হয়ে গিয়েছে মন্দিরের আশেপাশের দোকানগুলি। ভাঙন রুখতে না পারলে বিলীন হয়ে যাবে এই মন্দিরও। অস্তিত্ব হারাতে পারে সুপ্রাচীন তীর্থভূমি গঙ্গাসাগার। তাই সমুদ্রতট ভাঙন নিয়ে বিচলিত প্রশাসন।ভাঙন রোধে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে প্রায় তিনবছর ধরে। কিন্তু এখনও কেন সেই প্রকল্পের বাস্তবায়ন হল না, এনিয়ে প্রশ্ন উঠেছে প্রসাশনের অন্দরেই। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছর গঙ্গাসাগরের ১০০ থেকে ২০০ ফুট এলাকা সমুদ্র গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে গঙ্গাসাগরের ভাঙন ঠেকাতে তৎপর হয় সরকার। গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ এবং রাজ্যের পৌর দফতর যৌথভাবে এই কাজ শুরু করে।
আরও পড়ুন, আজই ঘূর্ণাবর্ত রূপ নিতে পারে সাইক্লোন অশনিতে, কলকাতাতেই প্রস্তুত এনডিআরএফ-র ১৭ টিম
আরও পড়ুন, দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা , ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কী বলছে হাওয়া অফিস
ভাঙনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন, স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। তিনি জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগরের ভাঙন রোধে, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেচ ও বন দফতরকে নিয়ে তট রক্ষা করা হবে। প্রশাসনের দাবি রাজ্য পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র এসে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে শক্তি বাড়াচ্ছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছেন এটি ৬ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার সরছে গেছে। পশ্চিম থেকে উত্তর পশ্চিম দিকে সরছে। দ্রুত শক্তি বাড়িয়ে রবিবার সন্ধ্যের মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড় অশনিতে পরিণত হতে পারে বলেও ভারতের আবহাওয়া দফতর অনুমান করছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে রবিবার সকাল ৫টা ৩০ নাগাদ এটি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসারের কেন্দ্রীভূত ছিল। নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ছেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিম দিতে অবস্থান ছিল। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে এটি ছিল ৩৮০ কিলোমিটার দূরে। আর বিশাখাপত্তনম থেকে এটির দূরত্ব ছিল ৯৭০ কিলোমিটার। ওড়িশার পুরী থেকে নিম্নচাপটি ছিল ১০৩০ কিলোমিটার দূরে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছে যাবে। সেখানেই তূব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না মৌসমভবন। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে দ্রুত গতিতে শক্তি সঞ্চয় করে এটি ১০ মে সন্ধ্যায় উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এটি এগিয়ে আসতে পারে অন্ধ্র ও ওড়িশা উপকূলের দিকে। যদিও শনিবার হাওয়া অফিস জানিয়েছিল ঘূর্ণিঝড়টির ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই কম। তবে এখন গতি পরিবর্তন করতে শুরু করেছে নিম্মচাপটি।