বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুর্শিদাবাদ সফর ঘিরে জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে। অর্ধশতক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন মমতা। জোর গ্রামীণ অর্থনীতি ও কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পে।
পুরভোটের(Municipal Polls) মুখে উত্তরবঙ্গ(North Bengal) সফরের পর তৃণমূল সুপ্রিমোর নজর এবার দক্ষিণবঙ্গে(South Bengal)। বুধবারই মুর্শিদাবাদে জেলা সফরে এলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়(Chief Minister's visit to Murshidabad)। এদিন বহরমপুরের(Bahrampur) প্রশাসনিক বৈঠকেই ৫০টি’র বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর(Chief Minister) হাত ধরে। সমস্ত পুরসভা এলাকাতেই কোনও না কোনও প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন তিনি। অন্যদিকে জেলা পরিষদেরও একগুচ্ছ প্রকল্প রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন হচ্ছে। ৮০ লাখ টাকার অধিক খরচ করে এই পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। সেইমতো বহরমপুরে রবীন্দ্রসদন সাজিয়ে তোলা হয়েছে। এখানেই তিনি প্রশাসনিক বৈঠক করবেন বুধবার।
অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি এদিন মমতার প্রশাসনিক বৈঠক রয়েছে মালদহকেও(Malda)। এদিকে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ চত্বরেই পর্যটন কেন্দ্রটি তৈরি হয়েছে। এখানে দু’টি মিউজিয়াম রয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রে অডিটরিয়াম, গেস্ট হাউস রয়েছে। সেগুলিরও উদ্বোধন করা হচ্ছে। বাংলা গ্রামীণ সড়ক যোজনায় চাঁদপাড়া থেকে আজিমগঞ্জ যাওয়ার রাস্তাটিও এদিন উদ্বোধন হচ্ছে। এই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বাসিন্দারা দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এছাড়া সুজাপুর সানঘাট থেকে নতুনগঞ্জ, নিশ্চিন্তপুর থেকে ঘোড়ামারার রাস্তাটিও চালু করা হচ্ছে। বাহাদুরপুর থেকে পলাশবাটি যাওয়ার রাস্তাটিও উদ্বোধন করা হচ্ছে। জেলা পরিষদের অধীনে থাকা ১৩টি রাস্তা ছাড়াও অন্যান্য দপ্তরের বেশ কয়েকটি রাস্তার উদ্বোধন করছেন মুখ্যমন্ত্রী। সহজ কথায় জেলা পরিষদের মোট ৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন হচ্ছে। খেসর, চাঁদপাড়া এলাকায় নতুন দু’টি ব্রিজ তৈরি করা হচ্ছে। মিশন নির্মল বাংলার অধীনে থাকা ১১টি কমিউনিটি টয়লেট তৈরির কাজের শিলান্যাস করা হচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন-হরিয়ানায় শক্তি বৃদ্ধি তৃণমূলের, গুরগাঁওয়ে উদ্বোধন প্রথম দলীয় কার্যালয়ের
অন্যদিকে বহরমপুর পুরসভার অধীনে ১১টি কমিউনিটি হেলথ সেন্টার তৈরির কাজের শিলান্যাস করা হচ্ছে। ব্যারাক স্কোয়ারের সৌন্দর্যায়নের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সেটিরও উদ্বোধন করা হচ্ছে। গোরাবাজার থেকে ফরাসডাঙা পর্যন্ত রাস্তাটি এক কোটি ১৮ লক্ষ টাকা খরচ করে সংস্কার হচ্ছে। সামশেরগঞ্জ, জঙ্গিপুর, জলঙ্গি ডোমকলেও একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী জেলায় এসে সব প্রকল্পের কাজের খতিয়ান নেবেন। সেই কারণে আধিকারিকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা তুঙ্গে। গত বছর জেলায় এসে তিনি বাড়িতে প্রসবের সংখ্যা কমানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। গর্ভবতী মায়েরা যাতে হাসপাতালে আসেন তার জন্যও প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগের থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। জঙ্গিপুর মহকুমায় এই সমস্যা বেশি ছিল। সেই কারণে ওই এলাকায় লাগাতার প্রচার চালানো হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, জেলায় সব প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে। টাকা আসতে দেরি হওয়ায় ১০০দিনের প্রকল্পের কাজ কিছুটা ঢিমেতালে চলছে।
আরও পড়ুন-পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ফের আক্রমণে ফিরহাদ, নিশানায় বিজেপি
অন্যদিকে বাংলা আবাস যোজনায় সাফল্যের নিরিখে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রথম সারিতে রয়েছে। তবে এই জেলায় স্কুলছুটের সমস্যা বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার বহু ছাত্রছাত্রী স্কুলমুখী হচ্ছে না। চেষ্টা করেও তাদের শিক্ষার আঙিনায় ফেরানো যাচ্ছে না। এই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আলোচনা করলে আধিকারিকরা অস্বস্তিতে পড়তে পারেন।তবে আধিকারিকদের দাবি, এই জেলা সম্প্রতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক এই জেলায় রয়েছে। লকডাউনের সময় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তাঁদের অনেককে ফিরিয়ে আনা হয়। ১০০দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দু’টি প্রকল্পে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। এই সাফল্যের দিকগুলিও জেলা আধিকারিকরা এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে তুলে ধরছেন।