অধীর গড়ে ঘাসফুলের দাপট, তিন দশক পরে কংগ্রেসের হাতছাড়া বহরমপুর পুরসভা

২৮ আসনের বহরমপুর পুরসভায় এবার মাত্র ৬টি ওয়ার্ডেরই দখল রাখতে পেরেছে কংগ্রেস। বাকি ২২টি ওয়ার্ডেরই দখল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু ২০১৩ সালে এই পুরসভা নির্বাচনে ২২টি আসনের মধ্যে মাত্র ২টি আসনে জয় পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। 

Saborni Mitra | Published : Mar 2, 2022 11:08 AM IST

লোকসভা নির্বাচনে কোনও রকমে জয় পেয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী (Adhir Choudhery)। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচেন তাঁর দূর্গ হিসেবে পরিচিত বহরমপুরে  ফাটল  ধরিয়ে দিয়েছ তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু পুরসভা নির্বাচনে সেই ফাটল আরও বড় হল। তিন দশক পর বহরমপুর পুরসভা (Baharampore Municipality) হাতছাড়া হল কংগ্রেসের (Congress)।  দীর্ঘ দিন ধরেই এই পুরসভায় একচ্ছত্র রাজ করে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। গতবারও এই পুরসভার দখল রেখেছিল কংগ্রেস। 

২৮ আসনের বহরমপুর পুরসভায় এবার মাত্র ৬টি ওয়ার্ডেরই দখল রাখতে পেরেছে কংগ্রেস। বাকি ২২টি ওয়ার্ডেরই দখল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু ২০১৩ সালে এই পুরসভা নির্বাচনে ২২টি আসনের মধ্যে মাত্র ২টি আসনে জয় পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৬ সালে কংগ্রেসের সদস্যদের ভাঙিয়ে এনে বোর্ড গঠন করে। কিন্তু এবার তৃণমূল কংগ্রেস এককভাবে ২২টি আসনে জিতেই বোর্ড গঠন নিশ্চিত করে ফেলে। প্রায় তিন দশক পরে এই পুরসভায় কংগ্রেসের একাধিপত্যে ভাঙন ধরিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বহরমপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড, যা আধীর চৌধুরীর পাড়া হিসেবে পরিচিত সেখানেই কংগ্রেস জয়লাভ করতে পারেনি। যদিও ভোটের দিন এলাকাতেই ছিলেন অধীর চৌধুরী। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। 

শুধু বহরমপুরই নয়, গোটা মুর্শিদাবাদ জেলাতেই ভালো ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। জেলার সবকটি পুরসভার বোর্ড গঠন করতে পারবে তৃণমূল কংগ্রেস। 

এমনিতেই রাজ্য রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে অবস্থান করেন অধীর চৌধুরী। মমতা কংগ্রেসে থাকাকালীনই দুজনের সম্পর্ক খুব একটা মধুর ছিল না। আর দলত্যাগের পর দূরত্ব আরও বাড়ে। প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব পাওয়ার পরেও অধীর চৌধুরী তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গঠন করে বিজেপি বিরুদ্ধে লড়াই করার বিষয়ে কিছুটা উদাসীন ছিলেন। উল্টে বামেদের সঙ্গে মঞ্চ শেয়ার করতেই আগ্রহী ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে বামের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়াই করেছিল কংগ্রেস। তারপর থেকে আরও মমতা আর অধীর চৌধুরীর দূরত্ব আরও বেড়েছে। যা নিয়ে পরবর্তীকালে একাধিকবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেছেন মমতা। তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রসঙ্গ তুলে মমতা জানিয়েছিলেন জাতীয় রাজনীতিতে তিনি প্রয়োজনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পিছিয়ে যাবেন না। যদিও তিনি সর্বদাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিজেপিওই তাঁর প্রথম ও প্রধান শত্রু। 
 
তবে দীর্ঘ তিন দশক পরে তৃণমূল হাতে হার অধীর চৌধুরীর রাজনৈতিক সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও মনে করছে। কারণ প্রদেশে কংগ্রেসের একটা অংশ এখনও পর্যন্ত বামেদের পরিবর্তে মমতার হাত ধরে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরোধিতা করতে আগ্রহী। তাই নিজের গড় দীর্ঘ তিন দশক পরে হাত ছাড়া হওয়ায় অধীর চৌধুরীকে জবাব দিতে হতেই পারে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। যদিও অধীর চৌধুরী এখনও গান্ধী পরিবারের অনুগত হিসেবেই পরিচিত। তাই আসন না টললেও জবাবদেহীতার মুখে পড়তে হতে পারে মুর্শিদাবাদের রবিন হুড নামে পরিচিত অধীর চৌধুরীকে। 

Share this article
click me!