ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছুঁতে পারে ১৯ হাজার কোটি টাকা। রাজ্য সরকারি সূ্ত্রকে উদ্ধৃত করে এমনই দাবি করেছে সংবাদসংস্থা। তবে এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলি থেকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট না এসে পৌঁছনোয় ক্ষয়ক্ষতির সঠিক অঙ্কটা বোঝা সম্ভব হচ্ছেনা।
গত শনিবার মূলত দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, উত্তর চব্বিশ পরগণা এবং পূ্র্ব মেদিনীপুরের উপরে আছড়ে পড়েছিল বুলবুল। ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সরকারিভাবে এখনও চোদ্দ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। যদিও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ থাকায় সেই সংখ্যাটা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আইএএস পদমর্যাদার এক আধিকারিক সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, 'ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির পর্যবেক্ষণের পরে বিভিন্ন দফতর থেকে প্রাথমিকভাবে হিসেব একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। তার উপর নির্ভর করেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আন্দাজ করার চেষ্টা চলছে। সব দফতর থেকে রিপোর্ট জমা পড়ে গেলেই চূড়ান্ত হিসেব তৈরি করা হবে।' সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে তাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৫ থেকে ১৯ হাজার কোটির মধ্যে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন- ঝড় গেল চলে, বুলবুল এল মায়ের কোলে, এক অসামান্য কাহিনি
আরও পড়ুন- বুলবুলের মোকাবিলায় রাজ্যের প্রশংসা মোদী সরকারের, জানালেন মমতা, দেখুন ভিডিও
মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা মঙ্গলবারের ক্ষতিগ্রস্ত তিন জেলায় ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসেব চেয়ে পাঠিয়েছেন বলে খবর। সেচ, বন, কৃষি, বিদ্যুৎ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং পঞ্চায়েত দফতর- সহ মোট চোদ্দটি দফতরকে বুধবার তাদের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে তা কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হবে।
এ সপ্তাহের শেষদিকেই কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রতিনিধি দল ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত এলাকাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব খতিয়ে দেখতে আসবে বলে খবর। তারাও একটি পৃথক রিপোর্ট তৈরি করবে। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি ঘুরে দেখে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। বুধবারই নামখানা, বকখালিতে আসার কথা বাবুলের।
মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বুলবুলের ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বিভিন্ন এলাকা আকাশপথে পরিদর্শন করেন। বুধবার উত্তর চব্বিশ পরগণার বসিরহাট এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন তিনি।
ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের জেরে যেমন হাজার হাজার কাঁচা বাড়ি ভেঙেছে, সেরকমই বিভিন্ন জেলায় নষ্ট হয়েছে ধান, সব্জির মতো ফসল। নষ্ট হয়ে গিয়েছে বহু পানের বরজ। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়া, খুঁটি উপরে পড়ার মতো ঘটনাও রয়েছে। বুলবুল প্রভাবিত এলাকাগুলির অনেক জায়গাতেই এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।