মুখ্যমন্ত্রীর কোনও নির্দেশ তারা মানবেন না। মানা হবে না রাজ্য সরকার, পুলিশকেও। প্রকাশ্য সভা থেকেই এমন হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। খড়্গপুরের সাংসদের যুক্তি, যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কোনও কথাই শোনেন না, তাই তাঁর কথাও এবার থেকে শুনবে না রাজ্য বিজেপি।
পুলিশ অনুমতি না দেওয়া সত্ত্বেও এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে সভা করল বিজেপি৷ কেশপুর ব্লকের আনন্দপুরে এই সভার জন্য পুলিশ অনুমতি দেয়নি৷ তা সত্বেও পুলিশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আনন্দপুর থানার সামনে বড়ো একটি মাঠে সমাবেশ করা হল শনিবার দুপুরে। সেখানে দিলীপ ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়, ভারতী ঘোষ, সায়ন্তন বসুর মতো রাজ্য বিজেপি-র নেতারা।
সভার জন্য পুলিশ অনুমতি না দেওয়াতেই এ দিন পাল্টা সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেন দিলীপ। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, 'আমরাও ঠিক করেছি মুখ্যমন্ত্রী যা বলবেন, আমরা তার উল্টো করব। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের মুখ্যমন্ত্রীদের ডাকেন রাজ্যের উন্নয়ন, অর্থ বরাদ্দ নিয়ে খোঁজ নেওয়ার জন্য। কিন্তু সেখানে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যান না। দিল্লি থেকে যে সার্কুলার আসে সেগুলি আপনি মানেন না। তাই আমরাও ঠিক করেছি দিদিমণির কথা মানব না। পুলিশ, সরকারের কথাও মানব না।'
এখানেই থেমে না থেকে পুলিশকেও আক্রমণ করেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'আজকে মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই পুলিশের এই অবস্থা হয়েছে। লোকের কাছে মার খেতে হচ্ছে। আমার মনে হয়, পুলিশের লোকেরা বাড়িতে বউয়ের কাছেও মার খান।'
লোকসভা ভোটে ঘাটাল কেন্দ্রের অন্তর্গত কেশপুরে আক্রান্ত হয়েছিলেন দলের প্রার্থী ভারতী ঘোষও। শাসক দলের বিরুদ্ধে গায়ের জোরে ভোট করানোর অভিযোগ তোলে বিজেপি। দিলীপবাবুর মুখে এ দিন তা নিয়েও ফের হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'এর পরে বিধানসভা ভোট যখন হবে, তৃণমূলের যারা আটকেছিল, তাঁদের বলে দেবেন, হয় ঘরের মধ্যে বসে থাক, নয়তো কেশপুর ছেড়ে চলে যা, নাহলে ফল ভাল হবে না।'
ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি-র হারের পিছনে অন্যতম কারণ কেশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের বিশাল ব্যবধানের লিড পাওয়া। বিজেপি নেতা মুকুল রায় অবশ্য এ দিনের সভা থেকে দাবি করেন, আগামী বিধানসভা ভোটে কেশপুর থেকে লক্ষাধিক ভোটে জিতবে বিজেপি।