ইদের নমাজ পাঠ করতে হবে। কিন্তু অনশন মঞ্চ ছাড়া যাবে না। তাই বকরি ইদের দিন অনশন মঞ্চ থেকেই নমাজ পাঠ করলেন জলপাইগুড়ির তিস্তা সেচ প্রকল্পে জমি দানকারী পরিবারের বারোজন সদস্য।
১৯৭৪ থেকে '৯৪ সালের মধ্যে তিস্তা সেচ প্রকল্পে নিজেদের কৃষিজমি সরকারকে দিলেও আশ্বাস অনুযায়ী চাকরি পাননি। তাই চাকরির দাবিতে জেলা শাসকের অফিসের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছে জলপাইগুড়ি ভুমিহারা কমিটির ৭০ জন সদস্য। এ দিন তাঁদের অনশন চতুর্থ দিনে পড়ল। এলাকার তৃণমূল বিধায়ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, কারও অনুরোধেই অনশন প্রত্যাহার করেননি আন্দোলনকারীরা। তাঁদের স্পষ্ট কথা, মুখ্য়মন্ত্রী বা রাজ্য সরকারের তরফে লিখিত প্রতিশ্রুতি পেলে তবেই অনশন প্রত্যাহার করা হবে। এর মধ্য়েই অনশনের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অনশনকারীদের মধ্যেই ছিলেন বারোজন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রশাসনের উপরে চাপ বাড়াতে তাঁরাই এ দিন অনশন মঞ্চে নমাজ পাঠের সিদ্ধান্ত নেন।
জলপাইগুড়ি ভূমিহারা কমিটির সভাপতি নজরুল রহমান জানান, জলপাইগুড়ি সদর,রাজগঞ্জ, ময়নাগুড়ি ব্লকের কৃষিজীবী পরিবারগুলি ১৯৭৭ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে তিস্তা সেচ প্রকল্পের জন্য নিজেদের জমি দিয়েছিল। কিন্তু নামমাত্র দাম দেওয়া হলেও জমির সঠিক দাম দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এমন কী, পরিবারপিছু একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও পূরণ হয়নি বলে অভিযোগ।
গত ১০ বছর ধরে আন্দোলন করেও কিছুই হয়নি। তাই জেলা শাসকের অফিসের সামনে প্রথমে রিলে অনশন করেও সরকারি সাড়া না পেয়ে দু' দিন ধরে আমরণ অনশন শুরু করেছেন জমিদাতা পরিবারের সদস্যরা।
জেলা তৃণমুলের কার্যকরী সভাপতি এবং রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ও ইতিমধ্যে অনশন মঞ্চে এসেছেন। তিনি আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি সমর্থনও জানান। রাজ্য নেতৃত্ব এবং সেচ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানাবেন বলেও আশ্বস্ত করেন বিধায়ক। অনশন তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন খগেশ্বরবাবু। তাতেও সাড়া দেননি অনশনকারীরা। সোমবার জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় এসে অনশনকারীদের বুঝিয়েও অনশন তুলতে পারেননি।