মানবিকতার হাত, বহুরূপীদের পাশে অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায় ও লোকেশ্বরানন্দ আই ফাউন্ডেশন

পুরুলিয়ার লোকেশ্বরানন্দ আই ফাউন্ডেশনের সাথে কলকাতার উষ্ণিক নাট্যগোষ্ঠীর বিখ্যাত চিত্রাভিনেতা শুভাশীষ মুখোপাধ্যায়। করোনা কালে বীরভূমের বহুরূপীদের গ্রামে গিয়ে দেখলেন তাদের দুরবস্থা

Parna Sengupta | Published : Jul 20, 2021 2:43 PM IST

পুরুলিয়ার লোকেশ্বরানন্দ আই ফাউন্ডেশনের সাথে কলকাতার উষ্ণিক নাট্যগোষ্ঠীর বিখ্যাত চিত্রাভিনেতা শুভাশীষ মুখোপাধ্যায়। করোনা কালে বীরভূমের বহুরূপীদের গ্রামে গিয়ে দেখলেন তাদের দুরবস্থা।করলেন সহায়তা।দিনভর উপভোগ করলেন বহুরূপীদের কলাকৌশল।

পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের বরণ ডাঙ্গার লোকেশ্বরানন্দ আই ফাউন্ডেশন পুরুলিয়ার মতো প্রান্তিক জেলায় শুধু চোখের চিকিৎসা করেই নজির তৈরি করেনি। করোনা মহামারির সময় প্রথম লকডাউন থেকে শুরু করে দ্বিতীয় তরঙ্গের প্রকোপ। লোকেশ্বরানন্দ আই ফাউন্ডেশন অতিমারি থেকে পুরুলিয়া জেলার মানুষকে বাঁচাতে নানাবিধ পরিষেবা দিয়ে চলেছে। 

পুরুলিয়া জেলার জঙ্গলমহলের ব্লক বলরামপুর,বরাবাজার,বান্দওয়ান মানবাজার হয়ে জেলার বাইরেও বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান, বীরভূম প্রভৃতি জেলাতেও অতিমারীর এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে  দাঁড়িয়েছে এই চক্ষু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অক্সিজেন ক্লাব তৈরি, প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ, মেডিকেল ক্যাম্প ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণের মধ্য দিয়ে জেলায় এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে এই সংস্থাটি।

দিন কয়েক আগে বীরভূম জেলার যে সমস্ত গ্রাম বহুরূপীদের গ্রাম হিসাবে পরিচিত সেই সব গ্রামে গিয়ে লোকশিল্পী "বহুরূপী"র পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে লোকেশ্বরানন্দ আই ফাউন্ডেশন। বহুরূপীরা সারা বছর ধরে নানান কলা কৌশল করে রোজগার করলেও করোনার কারণে এক বছরের ওপর তাদের রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলা সাহিত্যে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত চরিত্র শ্রীনাথ বহুরূপীকে আমরা দেখতে পাই। সেই থেকে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে এবং নাটকে এই বহুরূপীদের জীবন-জীবিকা চিত্রিত হয়েছে নানাভাবে। ধুলোমাখা রাস্তায় এলোমেলো গ্রামগুলিতে ঘুরে বেড়ানো এই বহুরূপীরা উঠে এলো সংস্কৃতির আঙিনায়। কিছুটা হলেও ফিরে পেলেন এরা শিল্পীর মর্যাদা।

বংশপরম্পরায় আজও এই জীবিকার সঙ্গে যুক্ত আছেন বহু বহুরূপী। পৌরাণিক ঐতিহাসিক সামাজিক-- নানা চরিত্রে সেজে ,অভিনয় করে, গান গেয়ে ,সংলাপ বলে মানুষকে কিছুক্ষণের জন্য বিনোদন দিয়ে তারা জীবিকা নির্বাহ করেন। সম্পর্ক তৈরি হয় গ্রামের মানুষের সঙ্গে। গড়ে ওঠে আত্মীয়তা। শিল্পীরা হয়ে ওঠেন সেই গ্রামের পরিবারগুলির আত্মিক সদস্য। আজও তারা বেঁচে আছেন। বীরভূম জেলার লাভপুর ব্লকের অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রাম যেমন বিষয়পুর, শীতলগ্রাম, কুনিয়ারা, ধনডাঙ্গা, নাউতারা প্রভৃতি গ্রাম থেকে আগত ২৫০টি বহুরূপী পরিবারকে সম্মান সহায়ক হিসেবে তেল, ডাল, সোয়াবিন, ছাতু, সাবান, মাস্ক, চিনি প্রভৃতি তুলে দেওয়া হয়। 

এই অনুষ্ঠানটি কলকাতার "উষ্ণিক" নাট্য সংস্থা এবং "বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী" র যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ও নাট্য অভিনেতা শুভাশীষ মুখার্জি, নাট্যপরিচালক ঈশিতা মুখার্জি, লোকেশ্বরানন্দ আই ফাউন্ডেশন এর পক্ষে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা রুমা গুহ নিয়োগী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শিক্ষক ও বাচিকশিল্পী শুভাশিস গুহ নিয়োগী ও নাট্যকর্মী সুদিন অধিকারীরা।

Share this article
click me!