'ইলিশ আর কচুর শাক রান্না করে রেখো', স্ত্রীকে বলা এটাই শেষ কথা ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ বিশ্বনাথ রায়ের


২৮ বছর আগের স্মৃতি এখনও টাটকা রায় পরিবারের কাছে। ২১ জুলাই শহিদ দিবসের দিনে স্বামীকে হারিয়ে ছিলেন স্ত্রী।বাবাকে হারিয়ে ছিল ছেলে। এখন তৃণমূল কংগ্রেসেই তাঁদের ভরসা। 

Asianet News Bangla | Published : Jul 20, 2021 1:00 PM IST / Updated: Jul 20 2021, 06:34 PM IST

দেখতে দেখতে পার হয়েগেছে ২৮টি বছর। চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্বামীর শেষদিনের স্মৃতি একটুও অস্পষ্ট হয়নি। ভয়ঙ্কর সেই  অতীত যেন এখনও বাস্তব মা আর ছেলে দুজনের কাছেই। স্বামীর সেদিনের কথা বলতে বলতে আজও গলা কেঁপে ওঠে মিতালী রায়ের। তিনি তৃণমূলের শহিদ বিশ্বনাথ রায়ের বিধবা স্ত্রী। কাজে যাচ্ছি বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। ইলিশ মাছ, কচুর শাক রান্না করে রাখতে বলেছিলেন স্ত্রীকে। কিন্তু তারপর আর বাড়ি ফেরা হয়নি। হাসপাতালের মর্গ থেকে উদ্ধার হয়েছিল তাঁর নিথর দেহ। যেকথা বলতে বলতে ৫০ বছরের মিতালীর গলা কেঁপে ওঠে এখনও। মিতালি আরও জানিয়েছেন স্বামীর মৃত্যু হয়েছে এই খবর পেয়েছিল এক দিন পরে অর্থাৎ ২২ জুলাই। স্বামীর খোঁজ না পেয়ে বাবার কাছে গিয়েছিলেন। সেই সময়ই জানতে পারেন তাঁর স্বামী আর বেঁচে নেই।  

করোনা মহামারি চ্যালেঞ্জ, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজাতে ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ

বিশ্বনাথ রায়ের ছেলে রাজীব ২৮ বছর আগে অনেকটাই ছোট ছিলেন। কিন্তু বাবার সেই স্মৃতি আজও আঁকড়ে ধরে পড়ে রয়েছেন তিনি। বাড়ি থেকে বার হওয়ার আগে বিশ্বনাথ তাঁকে বলেছিলেন ফিরে এসে পড়তে নিয়ে যাব। বাবার শেষ কথাটা বলতে গিয়ে দুচোখের কোনায় জল ছিল রাজীবের। বাবা আর আসেননি। আর দেখা হয়নি বাবার সঙ্গে। প্রতি বছর ২১ জুলাই আর্থাৎ শহিদ দিবসের দিনে সেই কথা আরও বেশি করে মনে হয়। সেদিনের ছোট্ট রাজীব এখন বড় হয়েছেন। জানিয়েছেন বাবাকে খুব কম সময়ের জন্যই কাছে পেয়েছেন তিনি। তাই আরও বেশি করেই মনে পড়ে সেই দিনের কথা। 

উপহারে ১ হাজার কেজি মাছ- ১০টি ছাগল, মেয়েকে ভালোবাসার এক অন্য ধরনের নজির দেখালেন এই বাবা

মিতালী আর রাজীব দুজনেই এখনও পর্যন্ত বিশ্বনাথ রায়ের স্মৃতি আঁকড়ে রয়েছেন। একই সঙ্গে মা আর ছেলে দুজনেই কৃতজ্ঞ তৃণমূল কংগ্রেসের ওপরেও। তাঁদের কথাও দলনেত্রী এখনও তাঁদের পাশে রয়েছেন। ভুলে যাননি শহিদের পরিবারকে। ব্যক্তিগত স্তরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। চিঠি লেখেন বলেও জানিয়েছেন মিতালী। রাজীবের কথায় তাঁর বাবাকে এখনও মনে করেছেন দলনেত্রী। তৃণমূল তাঁদের এখনও সম্মান দেয়। অন্যকোনও দলে থাকলে এই সম্মান পেতেন তিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। 

'বড় লক্ষ্যে এগিয়ে যাও', মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের অভিনন্দন মুখ্যমন্ত্রী মমতার

সালটা ছিল ১৯৯৩। তৎকালীন যুবকংগ্রেস নেত্রী ছিলেন এদিনের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের স্বচ্ছতার জন্য মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ডাকেই যুবকংগ্রেস কর্মীরা জড়ো হয়েছিলেন। অভিযোগ সেই সময় বাম সরকারের পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়। তাতেই মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। পরবর্তীকালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস গঠেন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নতুন দল গঠনের পরেও ২১ জুলাই তিনি ভোলেননি। এই বিশেষ দিনটি তৃণমূল কংগ্রেস রীতিমত গুরুত্ব দিয়ে পালন করে। সামনের সারিতে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি বছরও শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে একগুচ্ছ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। 
 

Share this article
click me!