ভাগাড়ের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়েছিল অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের দেহ। হালিশহরে চার নম্বর ওয়ার্ডে শনিবার যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শনিবার চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই এই ঘটনার কিনারা করল বীজপুর থানার পুলিশ। জানা গেল, এক গৃহবধূর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার জেরেই খুন হতে হয়েছে ওই যুবককে। ঘটনায় অভিযুক্ত দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম মিলন খাঁ (২০)। তিনি বর্ধমানের ধানতলার বাসিন্দা। ওই যুবকের দেহ উদ্ধারের পর তাঁর মোবাইল ফোন এবং সঙ্গে থাকা অন্যান্য কাগজপত্রের সূত্র ধরে নিহতের পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। এর পর নিহত মিলনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে যুবকের সঙ্গে এক গৃহবধূর সম্পর্কের কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা। মিলনের পরিবারই জানায়, হালিশহরের নারায়ণপল্লির বাসিন্দা সোনালি হালদার নামে এক গৃহবধূর সঙ্গে ফেসবুকের সূত্রে আলাপ হয় মিলনের। ধীরে ধীরে তার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ওই যুবক। সম্পর্কের কথা জানতে পেরে ওই গৃহবধূর স্বামী মিলনকে হুমকিও দিয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ।
এর পরই সোনালি এবং তার স্বামী সৌমিত্র হালদারকে আটক করে জেরা শুরু করে পুলিশ। দীর্ঘক্ষণ জেরায় ভেঙে পড়ে ওই দম্পতি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সম্পর্ক থেকে সরে যাওয়ার জন্য বহুদিন ধরেই মিলনকে বুঝিয়েছিল সৌমিত্র। কিন্তু তার পরেও সোনালির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে মিলন। এতে ওই গৃহবধূরও সম্মতি ছিল বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। গত ২৬ নভেম্বর হঠাৎই ওই দম্পতির বাড়িতে চলে আসে মিলন। সেই সময় সৌমিত্রর সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। মিলন ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় নিজের বাড়িতেই ওই দম্পতি তাঁকে খুন করে বলে অভিযোগ। মিলনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলেও তাঁকে খুন করার সময় সোনালি নিজের স্বামীকে সাহায্য করে বলে অভিযোগ। গলা টিপে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। খুনের পরে চার নম্বর ওয়ার্ডের ভাগাড়ে যুবকের দেহ ফেলে রেখে আসে দম্পতি। দেহ লোপাট করতেও স্বামীকে সাহায্য করে সোনালি।
ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে এ দিনই ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার ওই দম্পতিকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের পুনর্নির্মাণ করতে পারে পুলিশ।