রায়দিঘির মনি নদীর চড়ের ভুবনেশ্বরী দ্বীপের পূর্ব শ্রীধরপুর এলাকা থেকে বন দপ্তরের পাতা খাঁচায় অবশেষে ১৬ দিন পর আজ ধরা পড়লো প্রাপ্ত বয়স্ক বাঘটি। বর্তমানে বাঘটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঝড়খালিতে।
মাছ (Fishing) ধরতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই বালির চরে দেখা যেত পায়ের ছাপ (Footprints)। প্রায়দিনই পায়ের ছাপ দেখতে পেতেন মৎস্যজীবীরা (Fishermen)। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল এলাকায়। রীতিমতো আতঙ্কে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা (Locals)। অনেকেই সন্দেহ করেছিলেন যে ওই এলাকায় বাঘ (Tiger) রয়েছে। এরপর বনদফতরের কর্মীরা নিশ্চিত করেন বাঘের উপস্থিতি। তারপর অনেক কষ্টে সেই বাঘকে খাঁচা বন্দী (Caged Tiger) করা হল। প্রায় ১৬ দিন পর বাঘকে খাঁচা বন্দী করায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে স্থানীয় বাসিন্দারা।
মাসখানেক আগে রায়দিঘির পূর্ব শ্রীধরপুর এলাকা সংলগ্ন ভুবনেশ্বরীচর জঙ্গলে আস্তানা নিয়েছিল ওই বাঘটি। মনি নদীর তটে অজস্র পায়ের ছাপ দেখে ওই এলাকায় বাঘ রয়েছে বলে সন্দেহ করেছিলেন মৎস্যজীবীরা। এমনকী ওই জঙ্গল থেকে বাঘের গর্জন শোনা যাচ্ছিল বলেও খবর। স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে সেই খবরই পৌঁছায় বনকর্মীদের কাছে। এরপর এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বনদফতর চেষ্টা চালাচ্ছিল লোকালয়ের জঙ্গলে ঢুকে পড়া বাঘটিকে খাঁচাবন্দী করতে। কিন্তু, কিছুতেই বাঘকে আর খাঁচাবন্দী করা সম্ভব হচ্ছিল না। এরপর অনেক কষ্টে তাকে খাঁচায় প্রবেশ করাতে সক্ষম হন বন দফতরের কর্মীরা।
আরও পড়ুন- দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা শরীর, বীরভূমে খুন ব্যবসায়ী
রায়দিঘির মনি নদীর চড়ের ভুবনেশ্বরী দ্বীপের পূর্ব শ্রীধরপুর এলাকা থেকে বন দপ্তরের পাতা খাঁচায় অবশেষে ১৬ দিন পর আজ ধরা পড়লো প্রাপ্ত বয়স্ক বাঘটি। বর্তমানে বাঘটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঝড়খালিতে। মঙ্গলবার সুন্দরবনের ব্যাঘ্র প্রকল্পের আওতার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- আনিসের মৃত্যু রহস্য ধামাচাপা দিতেই রাজ্যের সিট গঠন-কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের
জানা যায়, ৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম রায়দিঘীর দমকল এলাকায় মনি নদীর চরে পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন স্থানীয়রা। পরে বন দফতরের তরফে বাঘটির গতিবিধির উপর নজরদারি করে এলাকায় খাঁচা পেতে রাখে। এদিকে কোনওভাবেই বাঘকে আর ধরা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে স্থানীয়দের কাজে ব্যাঘাত ঘটছিল। তাই বাঘকে বাগে আনতে রায়দিঘি রেঞ্জ অফিসের বনকর্মীরা ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতার পাশাপাশি জঙ্গলটিকে শক্তপোক্ত নাইলোনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলে। কিন্তু নাছোড় বাঘ কোনও ভাবেই খাঁচাবন্দী হচ্ছিল না। তার মধ্যে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন স্থানীয়রা। অবশেষে সোমবার বন দফতরের পাতা খাঁচায় বাঘটি ধরা পড়ে। বর্তমানে বাঘটিকে মাতলা রেঞ্জের ঝড়খালিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখার পর ব্যাঘ্র প্রকল্পের আওতার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। এদিকে বাঘ খাঁচাবন্দী হওয়ার পর স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাঘের আতঙ্ক কাটিয়ে ফের স্বাভাবিক জীবন শুরু করছেন সেখানকারা মৎস্যজীবীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসিন গাজী জানান, "বাঘটা এত বড় যে খাঁচার ভিতরে রাখতে বনকর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছিল। বাঘটা লোকালয়ের জঙ্গলে ঢোকার পর থেকে ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম আমরা। বনকর্মীদের অসংখ্য় ধন্যবাদ। দিনের-পর-দিন জঙ্গলে পড়ে থাকে বাঘটাকে খাঁচাবন্দি করতে পারল।"