মুহূর্তের অসতর্কতায় ঘাড়ের উপর এসে পড়েছিল পূর্ণবয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। মুখ আর ঘাড়ের পিছনে কামড়ও বসিয়ে দিয়েছিল সে। শেষ প্রাণশক্তিটুকু দিয়ে তখন বাঘের সঙ্গে যুঝে যাচ্ছিলেন বছর পয়ষট্টির যাদব মণ্ডল। বাঘকে তাড়াতে শোরোগোল জুড়ে দেন তাঁর সঙ্গীরাও। শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধের মুখে পড়ে মৎস্যজীবীকে ছেড়ে ফিরে যায় বাঘ। গুরুতর জখম ওই মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে গোসাবা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার সকালে সুন্দরবনের পিরখালির জঙ্গলে বাঘে- মানুষে টানাটানির সাক্ষী থাকলেন বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবী। জানা গিয়েছে, হত বুধবার জনা সাতেক মৎস্যজীবী মাছ ও কাঁকড়া ধরার জন্য পিরখালির জঙ্গলে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সুন্দরবনের পাখিরালয়ের বাসিন্দা যাদব মণ্ডল নামে ওই প্রবীণ মৎস্যজীবী। শুক্রবার রাতে পিরখালির জঙ্গলে খাঁড়িতে মাছ ধরার জাল ফেলেন তাঁরা। এ দিন সকালে সেই জাল থেকেই মাছ তুলছিলেন যাদব মণ্ডল। খাঁড়ির জলে নেমে মাছ ধরতে ধরতেই সঙ্গীদের থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, সেই সময়ই আচমকা যাদব মণ্ডলের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে একটি বাঘ। ওই মৎস্যজীবীকে টেনে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সে। প্রাণপণে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন যাদব মণ্ডল। বাঘকে দেখতে পেয়েই সঙ্গীকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করেন বাকি মৎস্যজীবীরা। কাদা মাটির বড় বড় টুকরো নিয়ে বাঘের গায়ে মারা হয়। বাঁশ দিয়ে ক্রমাগত নৌকার গায়ে বাড়ি মেরে শব্দ করতে থাকেন তাঁরা। তার সঙ্গে জোরে জোরে চিৎকারও করেন তাঁরা।
এতেই কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে অবশেষে যাদব মণ্ডলকে ছেড়ে জঙ্গলে ঢুকে যায় বাঘটি। গুরুতর আহত অবস্থায় যাদব মণ্ডলকে উদ্ধার করে গোসাবা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এনে ভর্তি করা হয়।