এনআরসি আতঙ্কের জেরে আরও একজনের মৃত্যু হলো বলে অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের শিবদা গ্রামের মুসলিম পাড়ার ঘটনা। মৃতের নাম গিয়াসউদ্দিন মিঞা (৭২)। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
মৃতের আত্মীয়দের দাবি, গিয়াসউদ্দিন মিঞার ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ডে নামের গরমিল ছিল। ভোটার কার্ডে তাঁর নাম ছিল মিঞা গিয়াসউদ্দিন এবং আধার কার্ডে ছিল গিয়াসউদ্দিন মিঞা। এই নাম সংশোধন নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করছিলেন বলে পরিবার জানিয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, ছোটাছুটি করেও ভোটার কার্ড সংশোধন করতে না পেরে চিন্তিত ছিলেন ওই বৃদ্ধ। তাঁর আশঙ্কা ছিল, এনআরসি হলে ওই নামের গরমিলের জন্য তাঁকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে। তাঁর ছেলে এবং পরিবারের সদস্যরাও সমস্যায় পড়বেন বলে ভয় পেতেন ওই বৃদ্ধ।
এই দুশ্চিন্তার কথা বার বার নিজের পরিবারকে জানিয়েছিলেন গিয়াসউদ্দিন। পরিবারের দাবি, শুক্রবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন ওই বৃদ্ধ। এর পরেই মৃত্যু হয় তাঁর। এনআরসি আতঙ্কের জেরেই তার হৃদরোগ হয় বলে দাবি পরিবারের।
শুক্রবারই এনআরসি আতঙ্কে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় একই এলাকায় পর পর দুই বৃদ্ধের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। ওই দু' জনও ভোটার এবং আধার কার্ডের ভুল সংশোধন করাতে না পেরে উদ্বিগ্ন ছিলেন বলে অভিযোগ। অন্যদিকে শুক্রবারই পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার জামবনিতে আরও এক বৃদ্ধের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়। সেক্ষেত্রেও পরিবারের দাবি ছিল, এনআরসি নিয়েই আতঙ্কে ছিলেন ওই বৃদ্ধ।
রাজ্যের শাসক দলের অভিযোগ, এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইনের আতঙ্কে রাজ্য জুড়ে পরের পর মৃত্যু ঘটছে। সংসদেও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল। যদিও শাসক দলের এই অভিযোগ খারিজ করেছে বিজেপি। তাদের পাল্টা দাবি, অপপ্রচার চালিয়ে অযথা এনআরসি নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে রাজ্যের শাসক দল।