শেষে কিনা গোপাল ভাঁড় ভোট বাজারে? শুনতে খানিক অবাক লাগলেও এমনই চিত্র দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদে।
পৌরসভা ভোটের আবহে উত্তপ্ত গোটা বাংলাই। শেষ মূহূর্তের প্রচারে জোর দিচ্ছে শাসক-বিরোধী সব পক্ষই। ভোট প্রচারেও দেখা যাচ্ছে নানা চমক। সম্প্রতি ভোটের প্রচারে বাদাম কাকুর গানও তুলেছিল ঝড়। কিন্তু শেষে কিনা গোপাল ভাঁড় ভোট বাজারে? শুনতে খানিক অবাক লাগলেও এমনই চিত্র দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদে। শুধু তাই নয় রীতিমতো ইলিশ মাছ থেকে মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে হাজির হচ্ছেন তিনি। তবে গল্পের গোপাল ভাঁড় আর এই বাস্তাবের গোপাল ভাঁড়ের মধ্যে রয়েছে খানিক স্বভাগগত পার্থক্য। ছোটদের মন জয় করতে গল্প গাঁথা নিয়ে আসর জমানো কিংবা রসের রসিকতায় মশগুল করাও নয়, বরং পুর নির্বাচনে ভোটের ময়দানে হাজির হয়েছেন গোপাল ভাঁড়।
এই রক্ত মাংসের গোপাল ভাঁড়কে চাক্ষুষ করতেই মজেছে মুর্শিদাবাদের আট থেকে আশি সকলেই। এদিকে এবারে মুর্শিদাবাদ পৌরসভায় প্রার্থী সংখ্যা মোট চার জন। কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপির পাশাপাশি এক জন নির্দল প্রার্থীও এবারের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্দল প্রার্থী সুচিত্রা হালদার নিজের প্রচারে একেক সময় একেক রকম ভাবে চমক দিয়ে বাসিন্দাদের মন পেতে চাইছেন। প্রচারের শুরুতেই ট্যাবলো তৈরি করে ঘুরেছেন মানুষের বাড়ি বাড়ি। তখন প্রচারে ছিল এলাকার উন্নয়নকামি প্রয়াত ব্যক্তিদের দেখানো মত ও পথ ধরেই আগামী দিনে কাজ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি। এবারের ভোটে এই নির্দল প্রার্থীর প্রতীক হিসাবে দেখা যাচ্ছে উদীয়মান সূর্য। এর আগে ট্যাবলো পরিক্রমায় দেখা গিয়েছে বেশ কিছু সম্প্রদায়ের মানুষ ওই সূর্য কে কাঁধে নিয়ে ঘুরছেন। সহজ কথায় সূর্য ভেদাভেদহীন সকল শক্তির উৎস। এলাকায় সম্প্রীতি সদ্ভাব প্রাচারের মধ্য দিয়েই সূর্য প্রতিকে ভোট দেওয়ার আবেদন রেখেছেন নির্দল প্রার্থী সুচিত্রা হালদার।
এবার এলাকার শিশু মন থেকে সব বয়সি ভোটারদের মন জয় করতে ভোটের ময়দানে হাজির করা হয়েছে গোপাল ভাঁড়কে। গোপালের এক হাতে আস্ত ইলিশ অন্য হাতে রয়েছে হাঁড়ি বোঝাই রসগোল্লা। প্রার্থীর সঙ্গে বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি ভোট প্রচারে হাজির হচ্ছে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের অন্যতম ওই রত্ন। সকলেই বলছেন, “বাপের জন্মে এমন প্রচার দেখিনি। শেষে কিনা গোপাল ভাঁড় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ইলিশ মাছ আর আস্ত মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে”।এই ব্যাপারে সুচিত্রা দেবী মুচকি হেসে বলছেন ,“ গোপাল ভাঁড় শুধু মাত্র রসিক ছিলেন তাই নয়। তিনি মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র কে সুচিন্তিত পরামর্শ দিতেন, বর্তমান সময়ে এই দুটির বড় অভাব ।সমাজে এই দুইয়ের মেল বন্ধন করতেই গোপাল ভাঁড় কে প্রচারে কাজে লাগিয়েছি ।” এদিকে গোপাল ভাঁড়কে দেখতে এলাকার শিশু মন যেমন ভীড় জমাচ্ছে তেমনই নস্টালজিক হতে দেখা গিয়েছে বয়স্কদের।
আরও পড়ুন- চব্বিশের মোদী বিরোধী প্রধান মুখ কে, কেসিআর-র উত্থানে কী চাপ বাড়ছে মমতার উপর