সংক্ষিপ্ত
সুইস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে হাজার হাজার কোটি গচ্ছিত রয়েছে পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন নেতা এবং সেনা আধিকারিকের। এই খবর বাইরে আসতেই ছড়িয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য।
২০১৮ সালে পাকিস্তানের মসনদে বসেন ইমরান খান। তাঁর নির্বাচনী প্রচারের বক্তৃতায় একটি বড় অংশ জুড়ে থাকত ‘ঘুষ’। এবং পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে মুলত এই বিশেষ বার্তার জন্যই ইমরান সরকার গঠিত হয়। কিন্তু আমেরিকার সংবাদপত্র ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ (The New York Times) একটি প্রতিবেদন বলছে এক অন্য কথা। সুইস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে (Swiss bank account) হাজার হাজার কোটি টাকা গচ্ছিত রয়েছে পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন নেতা এবং সেনা আধিকারিকের। এবং এই টাকার স্রোত সেই দ্বিতীয় বিশযুদ্ধের (World War II) সময়কার। পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা এবং সেনা আধিকারিকদের অ্যাকাউন্টে পাওয়া গেছে প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকা। এই তালিকায় রয়েছে, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর নিহত প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আখতার আবদুর রহমানের নামও। আর এটিই প্রমান করছে পাকিস্তানের এই ঘুষের জাল ছড়িয়ে পরেছে শীর্ষ পর্যায়ে।
সম্প্রতি ক্রেডিট সুইসি নামে সুইৎজারল্যান্ডের একটি আমানতকারী ব্যাঙ্ক থেকে কিছু নথি ফাঁস হয়। সেই ফাঁস হওয়া নথি জানাচ্ছে, সুইস ব্যাঙ্কের ৬০০টি অ্যাকাউন্টে প্রায় ১,৪০০ পাক নাগরিকের টাকা গচ্ছিত রয়েছে! এবং এই ফাঁস হওয়া নথি উদ্ধৃত করেই আমেরিকার সংবাদপত্র ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে লেখা হয়েছে, আশির দশকে আফগানিস্তানের মুজাহিদদের সোভিয়েত সেনার বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে বিপুল পরিমাণ অর্থসাহায্য করেছিল আমেরিকার গুপ্তচরসংস্থা সিআইএ। ওই সময়েই আখতার-সহ আরও অনেক পাক সেনা আধিকারিকদের সুইস ব্যাঙ্কের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ওই টাকার একাংশ চলে গিয়েছিল।
প্রয়াত পাক সেনাশাসক জিয়াউল হকের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন আইএসআই-এর নিহত প্রধান আখতার। জেনারেল জিয়ার সঙ্গেই বিমান দুর্ঘটনার তাঁর মৃত্যু হয়। তখন বিস্ফোরকের সাহায্যে উড়িয়ে দেওয়ার মত অভিযোগ উঠে এসেছিল ঠিকই, কিন্তু তা প্রমান হয়নি। আমেরিকার সংবাদপত্রের ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, সেই সময় পাকিস্তানের পাশাপাশি সৌদি আরবের মাধ্যমে আফগান মুজাহিদদের পাঠানো অর্থের একাংশও সুইস ব্যাঙ্কে জমা পড়েছিল।
আরও পড়ুন- সাহস থাকলে সিবিআই তদন্ত টাক রাজ্য, আনিস কাণ্ডে মমতাকে তোপ দিলীপের
আরও পড়ুন- কতটা শান্তিপূর্ণ ভোট হল উত্তরপ্রদেশে, তৃতীয় দফার নির্বাচন শেষে পাল্লা ভারী কার
ওদিকে ২০১৫ সালে সুইস ব্যাঙ্কের ‘ডর্ম্যান্ট’ অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে কোনও লেনদেন না হওয়া অ্যাকাউন্টগুলি নিয়ে তথ্য প্রকাশ্যে এনেছিল সুইৎজারল্যান্ড সরকার। তাতে বলা হয়েছিল, বেশ কয়েক জন পাক নাগরিকের অর্থ দাবিদারহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আবার ২০১৬ সালে ফাঁস হওয়া ‘পানামা নথি’তে দাবি করা হয়, সুইস ব্যাঙ্কে পাক রাজনীতিক, সেনা অফিসার এবং ব্যবসায়ীদের সাড়ে ৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি গচ্ছিত রয়েছে! আর এখন সদ্য ফাঁস হওয়া নথিতে পাকিস্তানের কয়েক জন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারও নাম রয়েছে। আর সেই কারণেই রাজনৈতিক মহল প্রশ্ন তুলছে, তাহলে কি ইমরান সরকার এই প্রভাবমান ঘুষের খাতা আজও বন্ধ করতে পারেননি?
আরও পড়ুন- আনিস মৃত্যুতে বড় পদক্ষেপ কলকাতা হাইকোর্টের, কবে শুরু হচ্ছে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানি
আরও পড়ুন- নয়া শিক্ষানীতির বাস্তবায়নে ব্যাপক ভাবে সাহায্য করবে এবারের বাজেট, দাবি মোদীর