পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রথমদিনই তুমুল বিশৃঙ্খলা
রাজ্যপালের বক্তৃতার মধ্য়েই বিজেপির বিক্ষোভ
বক্তৃতা শেষ না করেই বিধানসভা ছাড়লেন জগদীপ ধনখর
কিছু সময়ের জন্য মুলতুবি সভার কাজ
শুক্রবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধিবেশন শুরুর দিনই তুমুল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হল। হাতে প্ল্যাকার্ড ধরে, চিৎকার করে স্লোগান দিয়ে সভায় তুমুল হইচই বাধিয়ে দিলেন বিজেপি বিধায়করা। যার জেরে বক্তৃতা অসমাপ্ত রেখেই বিধানসভা ছাড়তে বাধ্য হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর।
জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর বক্তৃতা শুরু করার মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথাতেই বক্তৃতা থামিয়ে দিতে বাধ্য হন। তিনি বক্তৃতা দেওয়া শুরু করতেই বিধানসভায় বিরোধী বিধায়করা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। রাজ্যপাল বক্তৃতা থামিয়ে দেওয়ার পর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে তাঁর গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেন। আপাতত মুলতুবি রাখা হয়েছে সভার কাজ। বিকেল সাড়ে ৩টেয় ফের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা।
এই ঘটনা নিয়ে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কিছু এখনও না বলা হলেও, দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন, এটা বিজেপি এবং রাজ্যপালের সম্মিলিত রণকৌশলের অংশ। রাজ্যপালকে যাতে তাঁর পুরো বক্তব্য পড়তে না হয় তা নিশ্চিত করাটাই, বিজেপি বিধায়কদের এদিনের এই আচরণের কারণ, বলে দাবি করছেন তাঁরা। রাজ্যপালের বক্তব্যটি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেই লিখে দেওয়া হয়। রীতি অনুযায়ী,সেই লিখিত ভাষণই পাঠ করেন রাজ্যপাল। তবে, সেই লিখিত ভাষণের সবই তিনি পড়তে বাধ্য নন।
তিন বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলে জগদীপ ধনখর। অধিকাংশ সময়ই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ বেধেছে তাঁর। অতি সম্প্রতি ভুয়ো কোভিড টিকাদান শিবির, ১৯৯৬ সালের হাওলা কেলেঙ্কারী, নির্বাচনের পরবর্তী হিংসার মতো ঘটনা নিয়ে গনগনে রাজ্যপাল-রাজ্য সরকার সম্পর্ক। এই অবস্থায় তৃণমূল নেতৃত্ব আশঙ্কা করেছিল, তিনি রাজ্য সরকার খসড়া থেকে সরে অন্য কোনও বিষয়েও অবতারণা করতে পারেন তিনি। সেইক্ষেত্রে বিক্ষোভ জানানোর জন্য তৈরি ছিল শাসক দল।
বিজেপির চালে, সাপও মরল, লাঠিও ভাঙল না। রাজ্যের পাছানো খসড়া তোতাপাখির মতো আওড়াতে হল না রাজ্যপালকে, আবার, তৃণমূল কংগ্রেসর পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানোরও সুযোগ হল না।