আশিস মণ্ডল, বীরভূম: স্বামীর বন্ধুর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ার মাশুল! খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া সরকারি খাস জমি বিক্রি করে দিল দুষ্কৃতীরা! আতঙ্কে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের হরিদাসমাটি গ্রামে।
আরও পড়ুন: তৃণমূলকর্মী রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগে গ্রেফতার দলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি
বাপের বাড়ি বীরভূমের নলহাটির শীতলগ্রামে। বছর পনেরো আগে বহরমপুরের হরিদাসমাটি গ্রামের বাসিন্দা পিনটু পালের সঙ্গে বিয়ে হয় রীনা পালের। পিনটু পেশায় টোটো চালক। ওই দম্পতির দুই মেয়ে। পরিবারের লোকেদের দাবি, বিয়ের আগে বন্ধু অসীম দাসকে সঙ্গে নিয়ে হবু স্ত্রীকে দেখতে গিয়েছিলেন পিনটু। সেটাই কাল হল। বিয়ের পর থেকে বন্ধুর স্ত্রী রীনাকে অসীম নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বহরমপুর থানা অভিযোগ দায়ের করেন ওই গৃহবধূ। অসীমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জামিনে মুক্তি পাওয়ার আক্রোশ আরও বেড়ে যায় তাঁর।
এদিকে ততদিনে আর্থিক অনটনের কথা জানিয়ে সরকারের কাছে খাস জমির পাট্টা দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন পিনটু। ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে জমির পাট্টা পান তিনি। কিন্তু স্ত্রীর উপর আক্রোশের কারণে নকল দলিল তৈরি করে অসীম সেই জমি বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী প্রতিবাদ করে হামলার মুখে পড়ে পিনটু ও রীনা। আক্রান্ত গৃহবধূর দাবি, 'ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় কোপ মারার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। আমি হাত দিয়ে বাঁচাতে গেলে ডান হাতে কোপ পড়ে। বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হাতে ১৭ টি সেলাই লাগে।' এরপরই বেশ কয়েকজনে বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: 'মে মাসে ধুমধাম করে দিদিকে বিসর্জন হবে', বাঁকুড়ায় পথসভায় হুঁশিয়ারি দিলীপ ঘোষের
অভিযোগ, অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না। প্রতিনিয়ত বাড়িতে এসে খুনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে তারা। প্রাণে ভয়ে ছোট মেয়ে-কে নিয়ে বীরভূমের নলহাটিকে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন রীনা। শুধু তাই নয়, গাছ কেটে খাস জমিটিকে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের হরিদাসমাটি গ্রামে পঞ্চায়েত তৃণমূল প্রধানের। দলের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি বিভাসচন্দ্র অধিকারী বলেন, 'এক বছর ধরে ওই গৃহবধূ আমাদের কাছে আসছেন। মুখ্যমন্ত্রীর পাট্টা দেওয়া জমি কিছু দুষ্কৃতী বিক্রি করে দিয়েছে। ওই পরিবারের উপর মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার করা হচ্ছে। আমি দলের অনুমতি নিয়ে বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব। কারণ এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।' বিষয়টি দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকেও জানিয়েছেন তিনি।