সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকাহত বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার সহ আরও অনেকে। শোকপ্রকাশ করেছেন সবাই। আর তা নিয়েই এবার সরাসরি কোনও রাজনৈতিক নেতার নাম না করে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
প্রয়াত রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee)। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২২ মিনিটে এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কার্ডিওলজির আইসিসিউতে (cardiology) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর প্রয়াণে শোকাহত বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। আজ সকাল সাড়ে ১০টার সময় রবীন্দ্র সদনে (Rabindra Sadan) পৌঁছায় সুব্রতর দেহ। সেখানেই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাঁর প্রয়াণে শোকাহত বিজেপি নেতা (BJP Leader) শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh), সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) সহ আরও অনেকে। শোকপ্রকাশ করেছেন সবাই। আর তা নিয়েই এবার সরাসরি কোনও রাজনৈতিক নেতার নাম না করে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
টুইটারে কুণাল লেখেন, "বিজেপির যে দুজন নেতা সাতসকালে সিবিআই (CBI) পাঠিয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের চক্রান্তে জড়িত ছিলেন, এখন প্রচারের জন্য ন্যাকামি করে শোকজ্ঞাপন করতে সামনে গেলে নিজদায়িত্বে যাবেন। খবরটা অন্যরকমও হয়ে যেতে পারে। যদিও তৃণমূলকর্মীরা যথেষ্ট সংযত থাকবেন।" তাঁর এই পোস্ট অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এই ইঙ্গিত শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই করা হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন- 'অন্যতম অভিযুক্ত সুব্রত', মন্ত্রীর মৃত্যুর পর বিস্ফোরক অশোক ভট্টাচার্য
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে নারদ কাণ্ডে রাজ্যের চার হেভিওয়েট নেতাকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেই সময় ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় সহ আরও তিননেতা। বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরই এই গ্রেফতারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুর চড়িয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোটে জেতার পর তাঁদের চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে বলেও দাবি করেছিলেন তাঁরা। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল বঙ্গ বিজেপি। অবশেষে সুব্রতর প্রয়াণে সেই সময়কার পরিস্থিতিই তুলে ধরলেন কুণাল ঘোষ।
প্রসঙ্গত, ২৪ অক্টোবর শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন সুব্রত। পরীক্ষা চলাকালীনই তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। এরপর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে উডবার্নের আইসিসিউ-তে ভর্তি করেছিলেন চিকিৎসকরা। পরে কার্ডিওলজি আইসিইউ-তে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। সুব্রতকে ‘নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন’ বা বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল অক্সিজেনও। পরে তাঁর বুকেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। তবে কিছুটা সুস্থ হওয়ায় গত সপ্তাহে বাইপ্যাপ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছিল। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন সোমবার সুব্রতর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিও করা হয়। দুটি স্টেন্ট বসানো হয়েছিল। তারপর ঠিকই ছিলেন তিনি। কিন্তু, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি স্টেন্ট থ্রম্বোসিসে আক্রান্ত হন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। তারপর রাত ৯টা ২২ মিনিটে সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। রাত ১১টা নাগাদ তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তপসিয়ার পিস ওায়ার্ল্ডে। এরপর শুক্রবার সকালে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় রবীন্দ্র সদনে। সেখানে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান অনুরাগীরা। এরপর দুপুর ২টোর সময় দেহ নিয়ে যাওয়া হবে বিধানসভায়। সেখান থেকে তাঁর বাড়ি। তারপর কেওড়াতলাতে সম্পন্ন হবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য।