সংক্ষিপ্ত
সুব্রত-সোমেন-প্রিয়রঞ্জন, বাংলা তথা ভারতে এই 'ত্রি মাস্কেটিয়ার্স' ভীষণভাবেই চিরকালীন শিরোনামে থেকেছে। সোমেন মিত্র এবং প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি আগেই চলে গিয়েছেন,আর এবার ত্রি মাস্কেটিয়ার্সের কনিষ্ঠতম তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও চলে গেলেন অন্তহীন সীমান্তে।
সুব্রত-সোমেন-প্রিয়রঞ্জন, বাংলা তথা ভারতে এই 'ত্রি মাস্কেটিয়ার্স' ভীষণভাবেই চিরকালীন শিরোনামে থেকেছে। তবে এর আগেও দেশের ক্ষেত্রে এমন অবিচ্ছিন্ন হৃদয় সঙ্গ চোখে পড়েছে। তা সে বিনোদনে হোকে, বিজ্ঞান হোক, সাহিত্য কিংবা রাজনীতিতে। তবে সেই সম্পর্ক কখনও অনাবিল আনন্দ আবার কখনও বিচ্ছেদের যন্ত্রনাও এনে দেয় শহরকে। সোমেন মিত্র (Somen Mitra) এবং প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি (Priya Ranjan Dasmunsi) আগেই চলে গিয়েছেন। আর এবার ত্রি মাস্কেটিয়ার্সের কনিষ্ঠতম তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও (Subrata Mukherjee)চলে গেলেন অন্তহীন সীমান্তে।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ভাষায় বলতে গেলে, 'এ যেন নিশি ডাক।' কালী পুজোর মাঝেই ভরা অমাবস্যায় বৃহস্পতিবার শহর ছেড়ে চির ঘুমের দেশে গিয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। আর রেখে গিয়েছেন 'স্মৃতির শহর।' সারেঙ্গাবাদ থেকে কলকাতায় ইতিহাস নিয়ে পড়তে এসেছিলেন সুব্রত। ভর্তি হয়েছিলেন বঙ্গবাসী কলেজে। স্নাতক স্তরে শেষ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। আর সেখানেই শুরু হয় নতুন অধ্যায়। কংগ্রেসের দাপুটে নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। রাজ্যে তখন রাজ করছে কংগ্রেস। তার পাশে প্রহর গুণছিল বামেরা। এদিকে গুরু প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির দেখানো রাজনীতির পথে পরিণত হয়ে ক্রমশ উঠেছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একদিন প্রচারের মাঝে শিষ্যকে ডেকে পাঠালেন প্রিয়রঞ্জন। ক্যাজুয়াল পোশাক পরা সুব্রতকে একজোড়া সরু কালো পাড়ের ধুতি এবং সাদা পাঞ্জাবি দিয়ে প্রিয়রঞ্জন বলেছিলেন, 'নে, আজ থেকে ধুতি পাঞ্জাবি পরে প্রচার করবি।' মৃত্যুর আগেও তাঁর ৭৫ বছরের জীবনকালে তাই তাঁকে ধবধবে ধুতি-পাঞ্জাবি পরতেই দেখা গিয়েছে। আর এখানেই সুব্রত নামকরণের সার্থকতা। যার মানে যিনি নিয়ম-নিষ্ঠা নিয়ে ব্রত করে গিয়েছেন আজীবনকাল।
আরও পড়ুন, Subrata Mukherjee Live: সুব্রত-র আকস্মিক প্রয়াণ, বাকরুদ্ধ বাংলার রাজনৈতিক মহল
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি বাংলার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭২ সালের দিন ভয়ঙ্কর দিনগুলিতে তিনি বাংলারব মন্ত্রী ছিলেন। মাত্র ২৬ বছর বয়ছে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়েক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭২-র দিনগুলিতে রাজ্যের তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। একটা সময় বাংলার কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে ছিলেন তিনি। কিন্তু ২০০০ সালে কংগ্রেস ছেড়ে যোগদেন তৃণমূল কংগ্রেসে। ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে জিতে সুব্রত মুখোপাধ্যায় কলকাতা পুরসভার মেয়র হন। কিন্তু তারপর থেকেই বেশ কয়েকটি কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে। কলকাতা পুরভোটে আদালা জোট করে লড়াই করেন। তিনি জিতলেও তাঁর নেতৃত্বাধীন ডোট পরাজিত হয়। তারপর তিনি কংগ্রেসে ফিরে যান। কিন্তু ২০১০ সালে আবার তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন। তারপর আমৃত্যু সুব্রত মুখোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই ছিলেন। ২০১১ সালে রাজ্যের পালাবদলের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। সেই ময় তিনি পঞ্চায়েত মন্ত্রী হন। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েকর দায়িত্ব থাকা জনস্বাস্থ্য দফতরেরও দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচবেও তাঁর কেন্দ্র বালিগঞ্জ থেকে জিতেছিলেন তিনি। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।
আরও দেখুন, বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে