বিভূতিভূষণের জন্মদিনে চটুল নাচের আসর, কলুষিত হল স্মৃতি বিজড়িত বনগাঁ

  • উত্তর চব্বিশ পরগণার বনগাঁর গোপালনগরের ঘটনা
  • বিভূতিভূষণের জন্মদিনে চটুল নাচের আসর
  • সাহিত্যিকের জন্মদিন উপলক্ষে মেলায় লজ্জাজনক ঘটনা
     

debamoy ghosh | Published : Sep 15, 2019 6:03 AM IST / Updated: Sep 15 2019, 01:31 PM IST

সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন উপলক্ষে মেলা। আর সেই মেলাতেই আয়োজিত হল চটুল নাচের আসর। ছোট পোশাকে যুবতীদের চটুল নাচ দেখতে ভিড় করল মদ্যপ যুবকরা। এমনই লজ্জাজনক ঘটনার সাক্ষী থাকল অমর কথা সাহিত্যের স্মৃতি বিজড়িত বনগাঁর গোপালনগর এলাকা। নিজের কৈশোর এবং যৌবনের একটা বড় অংশ যেখানে কাটিয়েছিলেন বিভূতিভূষণ। চটুল নাচের আসর যখন জমে উঠেছে, তখনও মঞ্চের একপাশে বিভূতিভূষণের ছবি রাখা ছিল। মঞ্চে লাগানো ব্যানারেও ছিল বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই সমাজের সর্বস্তর থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। 

গোপালনগর থানার শ্রীপল্লি এলাকায় এখনও রয়েছে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি। এই বাড়িতে কাটিয়েছেন স্কুলজীবন। রচনা করেছেন বহু সাহিত্যও।গোপালনগর হরিপদ ইন্সটিটিউশনে শিক্ষকতাও করতে যেতেন এই বাড়ি থেকেই। কিংবদন্তি সাহিত্যিকের সেই বাড়ি আজও সাহিত্যপ্রেমী মানুষ এবং পর্যটকদের কাছে অন্যতম দ্রষ্টব্য। ১২ সেপ্টেম্বর বিভূতিভূষণের জন্মদিন উপলক্ষে গত ২৩ বছর ধরে শ্রীপল্লির মাঠে আয়োজিত হয় বিভূতিভূষণ সাহিত্য মেলা ও লোকসংস্কৃতি উৎসব। সেই মেলাতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলল চটুল নাচ। সাহিত্যপ্রেমীদের অভিযোগ, বিভূতিভূষণের স্মৃতিতে আয়োজিত মেলায় এমন নাচের আয়োজন করে আসলে কিংবদন্তি সাহিত্যিকের স্মৃতিবিজড়িত এলাকাকেই কলঙ্কিত করল অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা। 

এবারও সেই মেলার আয়োজন হয়েছিল শ্রীপল্লি এলাকায়। প্রতিবারই এই মেলায় সাহিত্য চর্চা, আলোচনা সভা এবং বাউল গান-সহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বহু দোকানও বসে। মেলায় ভিড় জমান বহু মানুষ। কিন্তু বিপত্তি বাঁধল এবারেই। অভিযোগ, এবছর মেলার অনুষ্ঠান চলার মাঝেই আচমকাই মঞ্চে ছোট পোশাক পরিহিত যুবতীদের চটুল নাচ শুরু হয়। যা দেখে বিস্মিত হয়ে যান বহু দর্শকই। পরের পর চটুল গানের সঙ্গে অশালীন নাচ চলতে থাকে। নাচ দেখতে ভিড় জমায় বেশ কিছু মদ্যপ যুবক। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে এভাবেই নাচের আসর চলতে থাকে। বিরক্তি এবং ক্ষোভে মেলা প্রাঙ্গন ছাড়েন অনেকেই। 

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন মেলাটির দায়িত্ব সামলেছেন প্রাক্তন বিধায়ক পঙ্কজ ঘোষ এবং বর্তমান বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের। বিশ্বজিৎবাবু ইতিমধ্যেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। তার পরেই এবার ওই মেলাটির কমিটির বদল হয়েছে। নতুন করে দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় সৌমেন দত্ত, ইয়ান আলি মণ্ডল, অশোক হালদাররা।

যাঁরা এলাকায় তৃণমূল নেতা এবং ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, 'বনগাঁর ভূমিপুত্র ‘পথের পাঁচালী’র স্রষ্টা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতিবিজড়িত এলাকায় চটুল নাচ আমাদের কাছে লজ্জার। কিছু মানুষ দায়িত্ব নিয়ে মেলাটিকে কলুষিত করল।' এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। 
 

Share this article
click me!