ডেকে পাঠিয়ে 'কর্তৃপক্ষের হুমকি', দুই ছাত্রীর পর আত্মহত্যার চেষ্টা ছাত্রের

  • সকালে দুই ছাত্রীর আত্মহত্যার হুমকি
  • সন্ধে গড়াতেই আত্ম হননের হুমকি দিল এক ছাত্র
  • পলিটেকনিক কলেজে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার হুমকি  নিয়ে উত্তেজনা
  • ঘটনার জেরে ওই ছাত্রকে হাসপাতালে দেখতে গেলেন কলেজের এক কর্তা
     

Asianet News Bangla | Published : Dec 11, 2019 2:40 PM IST / Updated: Dec 11 2019, 08:15 PM IST

সকালে দুই ছাত্রীর আত্মহত্যার হুমকি, সন্ধে গড়াতেই আত্ম হননের হুমকি দিল এক ছাত্র। গোপালপুরের বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার হুমকি  নিয়ে উত্তেজনা বজায় রইল বুধবার। ঘটনার জেরে ওই ছাত্রকে হাসপাতালে দেখতে গেলেন কলেজের এক কর্তা। যদিও আত্মহত্যার পিছনে কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনও হাত নেই বলেই মন্তব্য করেছেন তিনি।

বুধবার ভোর রাতে কম্পুউটার সায়েন্স টেকনোলজির প্রথম বর্ষের ছাত্রটিকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়, স্থিতিশীল রয়েছে আছে। তাকে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সে বেশকিছু ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিয়েছিল। সে যে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করতে চলেছে –এ কথা সোমবার রাত ১২.২০ নাগাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। আপলোড করে কিছু টেক্সট ও একটি আড়াই মিনিটের ভিডিও। ভিডিয়ো বার্তায় ছাত্র জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষ যে ভাবে অপমান করছে আর হুমকি দিচ্ছে, তাতে আমার পক্ষে আর বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। জয়ন্তবাবুর অনেক টাকা আছে, আমার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে, কলেজ আমাকে এ কথা বলে দিয়েছে। আমি অন্যের ভালো করার চেষ্টা করলাম, আর আজ আমার সব শেষ করে দিয়েছে ওনারা। 

রাত ১২ টা ০৪ থেকে ১২টা ৫৩ মিনিটের মধ্যে ছত্রিশটি পোস্ট করে ওই ছাত্র। তাতে সে দু পাতার একটি সুইসাইড নোট সহ কলেজের সহপাঠী তিন বন্ধুর কনট্যাক্ট ফোন নম্বর ও আপলোড করে। গোপালপুরের তার মেস বাড়ি থেকেই এই কাজ করে ওই ছাত্র। এরপরই তার আত্মহত্যার হুমকি, সুইসাইড নোট পৌঁছে যায় দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তাদের কাছে। তার সহপাঠীদের ফোন পেয়ে অসুস্থ ছাত্রটিকে উদ্ধার করতে মেসে পৌঁছে যান তার পরিবারের লোকেরাও। দ্রুত খবর যায় তার কলেজেও। 

বুধবার সকালে হাসপাতালে পৌঁছন কলেজের মুখ্য কার্যনির্বাহী মদন সরকার। তিনি জানান, আমাদের চেয়ারম্যান জয়ন্ত চক্রবর্তী নিজের চিকিৎসার জন্য হায়দরাবাদে আছেন। কলেজের অধ্যক্ষ রয়েছেন মিজোরামে। কলেজে পরীক্ষা চলাকালীন সোমনাথকে ডেকে তীব্র অপমান করায় ছাত্রটি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট প্রসঙ্গে মদনবাবু বলেন, এ সব আজগুবি কথা। আমরা জেনেছি ছেলেটি এমনিতেই মানসিক ভাবে অসুস্থ। তার চিকিৎসাও চলছে বলে ওর পরিবারই বলেছে। তিনি আরও বলেন, ওকে কোনও অপমানই করা হয়নি। উল্টে ওই ছাত্রটিই কোনও কিছু ভাল করে না বুঝে সোশ্য়াল মিডিয়ায় কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট করার মতো কাজ করেছে। তাই গতকাল ওকে একটু সচেতন করা হয়েছিল মাত্র।

ঘটনার সূত্রপাত, প্রথম বর্ষের দুই ছাত্রীকে প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় বসতে না দেওয়াকে ঘিরে। মাধ্যমিক পরীক্ষায় তাদের ৩৫ শতাংশর নীচে নম্বর থাকায় রাজ্য সরকারের পলিটেকনিক শিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের অ্যাডমিট কার্ড ইস্যু করেনি। এতে হতাশ হয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেয় কলেজ ক্যাম্পাসেই। পরে, কলেজের চেয়ারম্যান জয়ন্ত চক্রবর্তী তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আই.টি.আই. পড়িয়ে পলটেকনিক পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে। 
এদিকে, কলেজের কর্তারা কী করে কলেজের ভেতরের খবর বাইরে গেল এই তদন্ত শুরু করেন। জানা যায়, ওই দুই ছাত্রীর ভবিষ্যতের বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে সোশ্য়াল মিডিয়ায় পোস্ট করে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ছাত্র। অভিযোগ,  এরপরই ওই ছাত্রকে ডেকে পাঠিয়ে ধমক দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

Share this article
click me!