মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন পুলিশ সুপার তথা বর্তমান শাসকদলের কারিগরি দফতরের মন্ত্রী হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একটি বেসরকারি সংস্থা 'এল অ্যান্ড টি'-এর যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ২০০ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগ সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ার জন্য এদিন ডাকা হয় মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর স্টেডিয়াম মাঠে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সফরের আগে এক অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)। উর্দি গায়ে কয়েক লক্ষ বেকার চাকরিপ্রার্থী (Job Seekers) যুবকের লাইনে লাঠি চালাল সিভিক ভলেন্টিয়ার (civic volunteer) ও পুলিশকর্মীরা (Police)। বহরমপুর স্টেডিয়ামের মাঠে শনিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনার নিন্দা করেছেন অনেকেই।
মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন পুলিশ সুপার (Police Super) তথা বর্তমান শাসকদলের কারিগরি দফতরের মন্ত্রী হুমায়ুন কবিরের (Humayun Kabir) নেতৃত্বে একটি বেসরকারি সংস্থা 'এল অ্যান্ড টি'-এর যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ২০০ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগ সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ার জন্য এদিন ডাকা হয় মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর স্টেডিয়াম মাঠে। শিল্পের তকমাবিহীন জেলা হিসেবে পরিচিত এই মুর্শিদাবাদ। সেই জেলায় কর্মসংস্থানের অভাবে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয় যুবক-যুবতীদের। শিক্ষিত হয়েও কাজ পান না তাঁরা। তাই এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বেসরকারি কোম্পানির অধীনে চাকরির ব্যবস্থা করা হয় হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে।
সেই বেসরকারি কোম্পানির চাকরির ফর্ম জমা দিতে এসেই চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা তৈরি হল বহরমপুর স্টেডিয়ামে। মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর স্টেডিয়ামের মাঠে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে নিয়োগ সংক্রান্ত নথি জমা দেয়ার কাজ চলছিল। এই মাঠে ফর্ম ফিলআপ করতে হাজির হয়েছিলেন লক্ষাধিক বেকার যুবক। কোনওরকম ব্যবস্থা ছাড়াই ফর্ম জমা নেওয়া শুরু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ফলে তাড়াহুড়ো করতে গিয়েই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন- 'ভোটদানে বাধা দিলে দল থেকে বহিষ্কার', তৃণমূল কর্মীদের হুঁশিয়ারি অভিষেকের
অভিযোগ, এরপরই আচমকা বহরমপুর থানার পুলিশ লাঠি বাঁশ নিয়ে লাঠিচার্জ করতে শুরু করে। ভগবানগোলার এক চাকুরী প্রার্থী বলেন, "আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছিলাম বহরমপুরে এই নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হবে তাই এসেছিলাম। কিন্তু, এসে আমাদেরকে পুলিশের লাঠি খেতে হল। জেলায় কোনও কাজ নেই তার জেরেই ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয় কর্ম সংস্থানের জন্য। শেষ পর্যন্ত পুলিশ বেকার যুবকদের উপর এইভাবে নির্বিচারে লাঠি চালাবে তা আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি। এটা চরম অন্যায়। এর প্রতিবাদ ও প্রতিকার হওয়া দরকার।"
আয়োজন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে সাফাই দিয়ে জানানো হয়েছে, এটি ওপেন ফোরামের মাধ্যমে চাকরির জন্য বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে আবেদন পত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ চাকরির জন্য এত জন জমায়েত হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলাতে কোনও কাজ নেই, সেই জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়। তারপরে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। বাকি ঘটনা ঠিক কী ঘটেছে সেটা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। এই ঘটনার সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, একদিকে রাজ্যে যেমন কাজ নেই সেখানে মুর্শিদাবাদের অবস্থা আরও করুণ। তারমধ্যে মন্ত্রী হুমায়ুন কবির যেভাবে বেকার যুবকদের কোনও রকম ব্যবস্থা ছাড়াই চাকরির জন্য আবেদনপত্র জমা দিতে বলেছিল যুবকদের। তারপর তাদের লাঠিচার্জ করে পুলিশ। বেকার যুবকদের যে এভাবে হেনস্থা করা হল আমাদের কাছে তার কোনও ভাষা নেই।