
হালতুর একটি পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় এবারও নতুন মোড়। এবার গ্রেফতার করা হল আরও একজনকে। যার বিরুদ্ধে কমিশন নিয়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ধৃতের নাম সোমশপভ্র মণ্ডল। সোমনাথকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি সাহায্য করেছিলেন।
ধৃত সোমশুভ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ সোমনাথ রায়কে ১১ লক্ষ টাকা ঋণ পাইয়ে দিয়েছিলেন। প্রথমে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ৫ লক্ষ টাকা। তারপর এক স্বর্ণকারের থেকে ১ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা। এরপর ২ লক্ষ টাকা করে বিভিন্ন ঋণ প্রদানকারী সংস্থা থেকে পাইয়ে দিয়েছিলেন। পুলিশ মনে করছে একের পর এক ঋণের কারণে সোমনাথ রায় ও তাঁর পরিবার ঋণ-দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে যায়। সেই সঙ্গে পাওনাদারের চাপ বাড়তে থাকে। মানসিক অবসাগ গ্রাস করে রায় পরিবারকে।
হাতলুকাণ্ডে এর আগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মৃত সোমনাথ রায়ের মামা-মামি, ব্যাঙ্কের এক রিকভারি এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারপর গ্রেফতার করা হয় সোমশুভ্র মণ্ডলকে। তিনি কমিশনের বিনিময় ঋণ পাইয়ে দেওয়ার কাজ করেন।
জানা গিয়েছে, অটোচালক সোমনাথের মাথার ওপর প্রচুর টাকার দেনা ছিল। অটো ইউনিয়নের থেকে ৮ হাজার টাকা ধারও করেছিলেন ছেলের চিকিৎসার জন্। কিন্তু মৃত্যুর আগেই সেই ঋণ শোধ করেছিলেন। এছাড়াও একাধিক জায়গা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তাও শোধ করেন। অটো বিক্রি করে দিয়েছিলেন ঋণের দায়ে। কিন্তু তারপরেও সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ ছিল। সোমনাথের লেখা সুউসাইড নোট থেকেই মামা মামি আর চঞ্চলের কথা জানতে পারে পুলিশ। পুলিশ জানতে পেরেছিলন চঞ্চলের মাধ্যমে সোমনাথ ব্যাঙ্ক থেকে ১০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ব্যাঙ্কের পাওনা টাকা আদায়ে চঞ্চল বারবার সোমনাথ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হেনস্থা করত। বাড়ি গিয়ে অপমান করছে। আর সেই কারণেই চঞ্চলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে কসবার হালতুতে সোমনাথ, তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায় এবং আড়াই বছরের পুত্রের দেহ উদ্ধার হয়। ছেলের দেহ নিজের সঙ্গে বেঁধে গলায় দড়ি দিয়েছিলেন সোমনাথ। তাঁর স্ত্রীও গলায় দড়ি দেন। ঘরের দেওয়ালে লেখা ছিল সুইসাইড নোট। সেখানে পরিবারের সদস্যদের নামও উল্লেখ ছিল। সোমনাথদের মৃতদেহ উদ্ধারের পরই তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায়ের পরিবারের থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল পারিবারিক অশান্তি আর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া। তারপরই তদন্ত শুরু করে কসবা থানার পুলিশ। আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল সোমনাথের মামা ও মামিকে। যদিও প্রতিবেশিরা পাওনাদারদের কথাও তুলছেন। সবকিছু খতিয়ে দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন সবকিছু খতিয়ে দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।