
মন্দারমণি: আদালতের রায়ে কিছুটা হলেও সাময়িক স্বস্তি মিলল পূর্ব মেদিনীপুরের মন্দারমণির হোটেল ব্যবসায়ীদের (Purba Midnapore)। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় যে, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভাঙা যাবে না কোনও হোটেল। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের তরফে শেষ সুযোগের আবেদনে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্ট।
আদালত সূত্রে খবর, রাজ্যে নেই কোনও কোস্টাল রেগুলেশন জোন। যা নিয়ে এদিন কেন্দ্র ও রাজ্যের ভূমিকায় বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতির। সমুদ্রের পাড় দখল করে পূর্ব মেদিনীপুরের সৈকত শহর মন্দারমণিতে গজিয়ে উঠেছে একের পর এক আধুনিক ঝাঁ-চকচকে হোটেল। অভিযোগ, রীতিমতো পাঁচিল দিয়ে ঘিরে পর্যটকদের আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা করেছে একাধিক হোটেল। তাতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হওয়া মামলায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে শতাধিক বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নোটিস দেয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন হোটেল মালিকরা।
শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। শুনানিতে কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী আদালতে জানান যে, রাজ্যে আদৌ কোনও কোস্টাল রেগুলেশন জোনই নেই। যা শুনে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন করেন, 'কোস্টাল রেগুলেশন জোন হল সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার কত দূর পর্যন্ত নির্মাণ করা যাবে, সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা। এই নির্দেশিকা কেন্দ্রই জারি করে। তাহলে কেন্দ্রের কাছে কেন কোস্টাল রেগুলেশন জোন সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশিকা নেই?' তার উত্তরে এএসজি আদালতকে জানান, রাজ্যে কেন কোনও কোস্টাল রেগুলেশন জোন চিহ্নিত করা হয়নি, তা আধিকারিকদের থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। তাই তাদের জন্য একটা শেষ সুযোগ দেওয়া হয়।
এদিকে শুক্রবারের এই শুনানিতে হাইকোর্টে এই মামলার গ্রহণ যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রের আইনজীবী। কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল আদালতে প্রশ্ন করেন, জাতীয় পরিবেশ আদালতের প্রিন্সিপাল বেঞ্চ দিল্লিতে। সেই আদালতের নির্দেশকে কীভাবে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হতে পারে? তার উত্তরে পরিবেশ দফতরের আইনজীবী নয়ন বিহানী আদালতে জানান, এই ঘটনায় রাজ্য পরিবেশ দফতরের কোনও ভূমিকা নেই। এখানে কাদের, কোথায় কতদূর পর্যন্ত কী নির্মাণ করতে দেওয়া হবে, তা সম্পূর্ণটাই কেন্দ্রীয় বনদফরের আওতার মধ্যে পড়ে।
কেন্দ্র ও রাজ্যের এই বক্তব্য শুনে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তিনি বলেন, ‘’রাজ্য হোটেল মালিকদের সমর্থন করছে। কিন্তু কেন্দ্র কোনও উত্তর দিতে পারছে না। তাই এবার আইন আইনের পথেই চলবে। আইন মেনে মন্দারমণিতে হোটেল চালানো যায় কিনা সেটাই এবার শুধু দেখবে আদালত। কেন্দ্র একটা শেষ সুযোগ চেয়েছে। তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হোটেল না ভাঙার অন্তর্বর্তী নির্দেশ বহাল থাকবে।'' শুক্রবার মন্দারমণিতে হোটেল ভাঙার মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।