
জন্ম থেকেই ডান পায়ের পাতা ঘেঁষে ছিল লাল রঙের টিউমার। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করেও সুরাহা হয়নি। শিশুটির ৮ বছর বয়স হতে সে বন্ধ করে দেয় হাঁটাচলা। স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। শেষে অস্ত্রোপচার করে কেটে বাদ দেওয়া হয় টিউমার। কিন্তু, কদিনের মধ্যে ফের আবার দেখা যায় টিউমার। আবার দেখা দেয় হাঁটতে না পারার সমস্যা। বাচ্চাটির ১৩ বছর বয়স হতে আরও জটিলতা বাড়তে থাকে। কিশোর ছেলেটি পা ফেলতে পারত না ব্যথায়। ছেলেটি থাকে বিহারে। চিকিৎসা করতে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসে পরিবারে।
বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে দেখানোর পর নিয়ে আসার হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে পরীক্ষার পর তাঁকে হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগে ভর্তি করা হয়। শেষ পর্যন্ত এই রোগের চিকিৎসা হয়।
ডাঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, জ্ঞানের ফলিত প্রয়োগের মাধ্যমেই চিকিৎসা বিজ্ঞান এগিয়ে যায়।
তেমনই চর্মরোগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপত ডাঃ রমেশচন্দ্র ঘরামি বলেন, টিউমারটি হল এক্রিন অ্যাঞ্জিওমেটাস হামারটোমা। প্রাথমিতভাবে আমরা ঠিক করেছিলাম সার্জারি বিভাগে অস্ত্রোপচার করতে পাঠিয়ে দেব। কিন্তু এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার হয় স্কলেরোথেরাপি চালু করার। সেইমতো একটি বিশেষ ডিটারজেন্ট ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে টিউমারের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। যা টিউমারের গা ঘেঁষে যে সমস্ত রক্তবাহী নালী গিয়েছে তা দেওয়ালগুলো নষ্ট করে দেয়। ফলে টিউমার ছোট হতে থাকে। টানা এই চিকিৎসায় একসময় টিউমারটি ছোট হতে হতে একেবারে মিলিয়ে যায়। ফলে ওই কিশোরের আর অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হয় না। পা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়।
রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানিয়েছেন, ছেলেটি এখন সুস্থ পুরোপুরি। সে হাঁটাচলা চলা করছে। সে এখন দৌড়াতেও পারবে। খুব তাড়াতাড়ি তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান গিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আর এই টিউমার ফিরে আসবে না।