
শোকের আবহে নষ্ট হয়ে গিয়েছে মানসিক স্থিতিশীলতা। ঠিক থাকছে না কথার। একসময় একরকম ভাবছেন তো পরক্ষণেই অন্যরকম মেজাজ। এমন মানসিক অস্থিরতা, বিপর্যয়ের কারণে আরজিকরের মৃত তরুণী চিকিৎসকের মা বাবাকে আন্দোলন থেকে সরে আসার নির্দেশ দিল চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি করের আন্দোলনে একাধিক সময় দেখা গিয়েছে চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই কারণে তিনি অভয়ার মা-বাবাকে কাছ থেকে দেখেছেন। সদ্য তিনিই অভয়ার মা-বাবার সম্পর্কে মুখ খুললেন। তিনি বললেন, অভয়ার মা-বাবা পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে ভুগছেন।
এদিকে বিজেপির ডাকা নবান্ন অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন অভয়ার মা-বাবা। পুলিশ তাঁদের গায়ে হাত তোলে বলে খবর আসে। তবে, তার কোনও ভিডিও প্রকাশ পায়নি। এই নিয়ে জলঘোলাও হয়েছে বিস্তর। এরই মাঝে ভাইরাল হল চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য। তিনিন বলেন, এই রকম মনের অবস্থায় কোনও দলের অভয়ার মা-বাবাকে টেনে নিয়ে যাওয়া অমানবিক। যে সমস্ত রাজনৈতিক দল তাঁদের জোর করে মিছিল-মিটিং-এ নিয়ে যাচ্ছে তাদের বারণই করছেন তিনি।
ঠিক কী হয়েছে অভয়ার মা-বাবার? চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার বা পিটিএসডিতে ভুগছে তারা। এর উপসর্গ হল অ্যরাইজাল অ্যান্ড রিঅ্যাক্টিভিট সিম্পটম। এমন রোগীরা হঠাৎ চমকে যান। আকস্মিক রাগে ফেটে পড়েন। ওই ব্যক্তির শুতে, খেতে, মনঃসংযোগ করতে কিংবা সাধারণ কাজকর্মে অসুবিধে হয়। একাধিকবার অভয়ার মাক রাদের মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। এক্ষেত্রে রোগী ডিপ্রেশনে চলে যান। মনগড়া কথা বলেন। চিন্তা তাঁকে গ্রাস করে। তিনি বলেন, ওর মাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভীষণ মুড সুইং হচ্ছে। তিনি বলেন, তাঁদের কেস থেকে আপাতত সরিয়ে রাখা হোক। এর মধ্যে আর ওঁদের না জডানোই ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শ, এখন তাদের মেডিটেশন অথবা মনঃসংযোগ দরকার। প্রয়োজন সাইকোথেরাপির।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৯ অগাস্ট আরজিকর হাসপাতাল থেকে উদ্ধার হয় তরুণী চিকিৎসকের দেহ। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। এই ঘটনায় অনেকে যুক্ত ছিল বলে দাবি ওঠে। তবে, শাস্তি পেয়েছে শুধু সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। ঘটনার ১ বছর পূর্তির দিন ফের হয় নবান্ন অভিযান। অভিযোগ ওঠে সেখানে নির্যাতিতার মাকে মারধর করে পুলিশ।